কিংশুক ভট্টাচার্য: চিন্তন নিউজ: ৬ আগষ্ট:-!
বর্ষীয়ান কমিউনিষ্ট, প্রিয় জননেতা প্রাক্তন ছাত্র নেতা, প্রাক্তন সাংসদ ও রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী,প্রবাদ প্রতীম শ্রমিক নেতা যোদ্ধা শ্যামল চক্রবর্তীর মৃত্যুতে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে বড়জোড়া এরিয়া কমিটির বড়জোড়া ও শালগেড়্যায় মৌন মিছিল। মিছিল দুটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সিপিআইএম এরিয়া কমিটির সম্পাদক তথা জেলা কমিটির সদস্য সুজয় চৌধুরী। মিছিলের শেষে সংক্ষিপ্তাকারে প্রবাদ প্রতীম জননেতার, সমগ্র সংগ্রামী জীবন ও মানুষের মুক্তির স্বপ্ন সত্যি করার কাজে তাঁর আজীবন উৎসর্গীকৃত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন সুজয় চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই ওন্দা আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে কৃতি মাধ্যমিক – উচ্চমাধ্যমিক ছাত্র-ছাত্রীদের সম্বর্ধনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান পালন করা হয়। সম্বর্ধনার অনুষ্ঠানে স্মারক উপহার প্রদানেই অনুষ্ঠান সীমাবদ্ধ ছিলো না। এই অনুষ্ঠানে জীবনের জন্য রক্তদান শিবির পরিচালনা করা হয়। অংশগ্রহনকারিদের মধ্যে করোনা প্রতিরোধে সচেতনা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে মাস্ক বিতরণ ও করা হয়। এই কর্মসূচী তে যুব ফেডারেশনের জেলা সম্পাদক প্রদীপ পান্ডে উপস্থিত থেকে ছাত্র ছাত্রীদের আগামীদিনে আরও সাফল্য অর্জনে সচেষ্ট হতে উৎসাহিত করেন একইসাথে এই দেশের নয়া শিক্ষানীতি প্রবর্তনের নামে আগামী প্রজন্মকে ফেলে আসা অষ্টাদশ শতকের পিছিয়ে নিয়ে যাবার কছন্দ্রের ফ্যাসিস্ত পরিকল্পনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে দেশ রক্ষার লড়াইয়ের যোগ্য সৈনিক হয়ে ওঠার আবেদন রাখেন।

গত রবিবার মটর সাইকেল চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত পাঁচ যুবকের খোঁজে পুলিশ অভিযান চালায় বাঁকুড়া থানা এলাকার শালবনী গ্রামে।অভিযুক্ত পাঁচ যুবকের একজনকে পুলিশ রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। যদিও ঐ যুবকের পরিবারের দাবী যেদিনের ঘটনায় উক্ত যুবককে অভিযুক্ত করা হচ্ছে সেদিন ঐ যুবক সারাদিন বাইরে বেড়োন নি, বাড়িতেই ছিলেন। পরের দুদিন পরিবারের লোকেরা যুবকের বিষয়ে খোঁজ নিতে বারবার থানায় আসা যাওয়া করলেও তাদের সাথে থানার পক্ষে ঐ যুবকের সাথে সাক্ষাৎ করতে বা জামিনের বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকার করা হয়। বুধবার পরিবারের সদস্যরা পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করলে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের পরস্পর বিরোধী তথ্য সরবরাহ করা হতে থাকে। এরফলে তাঁদের সন্দেহ দৃঢ় হয় এবং থানা কর্তৃপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। তখন শেষ পর্যন্ত থানা থেকে জানানো হয় ঐ যুবক মৃত এবং মঙ্গলবার তাঁর পোষ্টমর্টম হয়ে গিয়েছে এবং পরিবারের লোকজন শেষকৃত্যের জন্য মর্গ থেকে শরীর নিয়ে যেতে পারে।

এই ঘটনা শুনে পরিবারের সদস্যরা হতচকিত অবস্থায় গ্রামে ফিরে যান এবং গ্রামের মানুষজনকে সমস্ত বিষয় জানালে গ্রামে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়। স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে বহু মানুষ বুধবার সন্ধ্যেতেই থানায় উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ জানান এবং পুরো ঘটনার যথাযথ সমাধান দাবী করতে থাকেন।রাত্রের মতো গ্রামবাসীরা ফিরে যান কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে আবার সমবেত হয়ে প্রায় পাঁচশতাধিক গ্রামবাসী থানা ঘেরাও করেন এবং মর্গ থেকে মৃতদেহ নিয়ে এসে থানার সামনে নামিয়ে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।বিক্ষোভের তীব্রতা উপলব্ধি করে পুলিশ ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ আধিকারিকবৃন্দ বিক্ষোভরত গ্রামবাসীদের সামনে থানায় আসতে বাধ্য হন। উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সাথে পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যদের উপস্থিতিতে গ্রামবাসীগণের সাথে আলোচনা করে পথ বের করতে উদ্যোগী হন। শেষপর্যন্ত গ্রামবাসীদের দাবীর সামনে অমানবিক সরকারের অমানবিক পুলিশ ও প্রশাসন মাথা নীচু করতে বাধ্য হন।

ঐ মৃত যুবকের দুই শিশু সন্তানের ভরণপোষনের জন্য সাতদিনের মধ্যে এককালীন ছয় লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ দেওয়া, তিন মাসের মধ্যে মৃত যুবকের বিধবা স্ত্রীর সরকারি চাকরি ও সেদিন রাত্রে ডিউটি থাকা পুলিশ কর্মিদের ও পুলিশের সেদিনের গাড়ির চালককে তাৎক্ষণিক ছয়মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেওয়ার শর্তে রাজী হতে বাধ্য করে ও লিখিত প্রতুশ্রুতির পর অবরোধ কর্মসূচী স্থগিত করে মৃতদেহের সৎকারের ব্যবস্থা গ্রহনে সম্মত হন গ্রামবাসীরা।
