শান্তনু বোস, চিন্তন নিউজ, শিলচর, ২৩ নভেম্বর: বিরুদ্ধতার ঢেউ আছড়ে পড়লো গোটা শিলচর উপত্যকায়। শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের পাশাপাশি এবার সাধারণ ধর্মঘটে সামিল হলেন এই রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও। কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন শিক্ষা নীতিতে প্রাক্- প্রাথমিক শিক্ষাকে স্কুলের আওতায় আনার সিদ্ধান্তে কর্মহীন হয়ে যাবে আসাম রাজ্যের ১ লক্ষ ২২ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়করা।
এই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি ভোটার তালিকার কাজ, জনগননার কাজ, এন আর সি’রকাজ করে সরকারের সহায়তা করলেও তারা কখনোই সরকারি কর্মীর মর্যাদা পায়নি। বাড়তি কাজ এই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা করে থাকলেও, বাড়তি বেতন কখনোই এই কর্মচারীদের দেওয়া হয়নি। মাত্র তিন হাজার থেকে সারে চার হাজার টাকায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। বিজেপি সরকারের একটা সিদ্ধান্তে আজ কর্মহীন হওয়ার পথে রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।
গত ২১শে নভেম্বর সিআইটিইউ অনুমোদিত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়ক সংস্থার পক্ষে জেলায় জেলায় সার্বিক প্রতিবাদে সোচ্চার হন হাজার হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। সমস্ত প্রতিবাদ সভা এবং মিছিলের ওপরেই বিজেপি সরকারের পুলিশ বর্বরোচিত ভাবে আক্রমণ নামিয়ে আনে। সংগঠনের সম্পাদিকা মিনা মেচ নির্ভীক কন্ঠে সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে জানান, সমস্ত দমন-পীড়নকে উপেক্ষা করেই সার্বিক লড়াই জারি থাকবে। আগামী ২৬শে নভেম্বর দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটে সামিল হবেন আসাম রাজ্যের সোয়া লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী।
সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে জোট বাঁধা সমস্ত বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে আসামের বিজেপি সরকার ভয়ঙ্কর দমন-পীড়ন চালিয়ে চলেছে। সভা বানচাল করা, মিছিলের ওপর পুলিশি আক্রমণ যেমন চলছে তেমনই বনধ্ সমর্থকদের গ্রেপ্তার করার মতো স্বৈরাচারী পদক্ষেপও নিয়ে চলেছে। এই দিন বরাক উপত্যকার কাছার জেলায় প্রত্যেকটি গ্রামে সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে এবং বিজেপি সরকারের পুলিশ দিয়ে গুন্ডাবাজির বিরুদ্ধে মশাল মিছিল সংগঠিত করে শ্রমিক, কৃষক সহ মেহনতী মানুষের জোট। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দলের মতো মৌলবাদী শক্তির রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বিরুদ্ধতার নতুন রঙে গোটা বরাক উপত্যকাকে রক্ত পতাকায় রাঙিয়ে ২৬শে নভেম্বর সাধারণ ধর্মঘটের মধ্যে দিয়ে নতুন ইতিহাস রচনা করতে চলছে উপত্যকার মানুষেরা।