দেবু রায়: নিজস্ব প্রতিবেদন:চিন্তন নিউজ: ৮ই আগস্ট:সামনে আছে 15th অগাস্ট, স্বাধীনতা দিবস , বিজেপি এবং তাঁর পেইড মিডিয়া চেষ্টা করবে একমাত্র বিজেপি দলটাই স্বাধীনতার জন্য বীর শহীদ দের শ্রদ্ধা করে , আর কেউ নয় , স্বাভাবিক সামনে কতগুলো রাজ্যে ভোট, এবং সর্বোপরি 24শে লোকসভার ভোট, সুতরং দেশ ভক্তি এখন থেকেই তুলতে হবে।
কিন্তু বাস্তব হচ্ছে বিজেপি বা আরএসএস কে যদি ইতিহাস দিয়ে খুঁজতে চেষ্টা করি , তাহলে দেখবো এরা কোনোদিনই ভগৎ সিং , চন্দ্রশেখর আজাদ, বা আসফাঁকুল্লা খান সহ আরও অনেক বিপ্লবী যারা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন তাঁদের কোনো দিনই শ্রদ্ধা করেই নি উল্টে সমালোচনা করতো , আরএসএস এর দলিল পত্রে এমন বহু প্রমান আছে । শুধু তাই নয় ইংরেজ শাসক দের বিরুদ্ধে। গান্ধীজির মতন নেতৃবৃন্দের দ্বারা পরিচালিত সংস্কার পন্থী নরমপন্থী ,বা চরমপন্থী আন্দোলন কেও তারা ঘৃণা করতো ।M, S. গোলওয়ালকার এর রচনা সংকলন #বাঞ্চ অফ থটস এর উল্লেখ আছে শহীদ বা মহান কিন্তু আদৰ্শ নয় #শীর্ষক পরিচ্ছেদ থেকে একটি অংশ র, কিছু অংশ তুলে ধরা হচ্ছে ,প্রথমেই গোলওকার তাঁর বাঞ্চ অফ থট (রচনা সমগ্র )বলে দিয়েছেন যে সফল জীবন এবং তাঁর উপাসনার বস্তু এবং “ভারতীয় সংস্কৃতি “(যেটা প্রকৃত অর্থ নিঃসন্দেহে আরএসএস সংস্কৃতি )শহীদত্ত বরণ করাকে শ্রদ্ধা ও করেনা এবং তাকে আদর্শ হিসাবে তুলেও ধরে না, শুধু তাই নয় তিনি নিজেও কোনো শহীদ দের নিজেদের নায়ক বলে মনে করে না. আবার বিজেপির নেতারাই ভোটের সময় পাঞ্জাবে গিয়ে ভগৎ সিং বাংলায় ক্ষুদিরাম কে স্মরণ করে যাতে ভোট বৈতরণী পার হওয়া যায়। তাহাকেই বুঝুন ওরা কত ভন্ড, শুধু এইখানেই শেষ নয় , গোলওকার সাহেব আরও বলেছেন (কিছু উধিত্রী তুলে ধরছি ) ” যারা শহীদত্ত বরণ করেন তারা হয়তো কিছু মানুষের কাছে নিঃসন্দেহে মহান , বীর, এবং তাঁদের দর্শন শ্রেষ্ঠ মানবচিত। যেসব গড় পড়তা লোকেরা ভাগ্যের হাতে দুর্বল ভাবে নিজেদের সপে দেয়, এবং ভয় আর নিষ্ক্রিয়তার মধ্যে জীবন কাটায়।
তাঁদের মহান ভাবার কোনো কারণ নেই। কারণ শহীদ হওয়া কে আমরা মহত্বের সেই উচ্চতম বিন্দু বলে মনে করি না। কারণ তারা নিজেদের
লক্ষ্য পূরণে ব্যার্থ। এবং তাঁদের এই ব্যার্থতা থেকেই বুঝা যায়, তাঁদের কাজের মধ্যে কিছু গলদ ছিলো “তাহলেই বুঝুন ক্ষুদিরাম, ভগৎ সিং দের পরিকল্পনা , এবং উদ্যেশের মধ্যে ভুল ছিলো , এটাই বইটিতে গোলওয়ারকার সাহেব বলেছেন।
যারা দেশের জন্য সব কিছুকে ত্যাগ করে , জীবন কে উৎসর্গ করলো , তাঁদের বলে লক্ষ্য, উদ্দেশ্য বলে ভুল ছিলো , কারণ তারা ব্রিটিশ দের বিরুদ্ধে ছিলো , শহীদ দের সন্মন্ধে এর থেকে অপমানজনক , মর্যাদা হানিকড় বক্ত্যব্য আর কি কিছু হতে পারে?.
ইংরেজ দের বিরুদ্ধে সংগ্রাম রত বিপ্লবী দের কী চোখে দেখতেন হেডগেওয়ার ও আরএসএস, তা জানলে প্রতিটি ভারত বাসী যারা শহীদ দের ভালোবাসেন তারা প্রত্যেকেই ব্যাথিত হবেন তাঁর আর একটা উদাহরণ দিচ্ছি, যা আরএসএস কর্তৃক প্রকাশিত হেডগেওয়ার এর জীবনীতে বলা হচ্ছে।
“দেশ প্রেম মানে শুধু জেলখানায় যাওয়া নয়।
এই ধরণের ভাষা -ভাষা দেশ প্রেমের টানে
ভেসে যাওয়া মোটেই ঠিক নয় । তিনি বারবার
বলতেন, উপযুক্ত সময়ে দেশের জন্য প্রাণ
দিতে তৈরি থাকার পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতার স্বার্থে সংঘঠিত হওয়ার জন্য বেঁচে
থাকা অত্যন্ত জরুরি।”
আমার তো ভাবতে বড়োই দুঃখ লাগে ভগৎ সিং , রাজগুরু, সুখদেব, আসফাঁকুল্লা খান বা চদ্র শেখর আজাদ এই সমস্ত মহান দেশ প্রেমিক রা ভাগ্যিস আরএসএস এর এই চিন্তা বিদদের সংস্পর্শে আসার সুযোগ হয় নি, তাহলে হয়তো এই সব শহীদরা ভাষা -ভাষা দেশ প্রেমের টানে নিজেদের জীবন কে উৎসর্গ করার হাত থেকে রক্ষা পেতেন .এদের বিরুদ্ধে বলার জন্য আমার কাছে একটাই শব্দ সেটা লজ্জা!, লজ্জা!আর লজ্জা।
1857সালের সিপাহী বিদ্রোহ কে আমরা মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম লড়াই বলে জানি। যেটা কে দেশপ্রেমিক প্রতিটি ভারতীয়র দের কাছে সম্প্রীতির একটা মিলন বিন্দু হিসাবে দেখা হয় , যেটার নেতৃত্ব দিয়েছিলেম শেষ মুগল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর , গোলওকার তাকেও ছাড়েন নি তাঁর লেখায় ।
“1857 সালে ভারতের তথা কথিত শেষ সম্রাট
তুর্য্য ধ্বনি করেন, গাঁজিও মে বু রহেগি জব তালাক ঈমান কি /তখতে লন্ডন তক চলেগি…
(অর্থাৎ যোদ্ধারা যত দিন নিজেদের অঙ্গীকার এর প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে /ভারতীয় তরবারি পৌঁছে যাবে লন্ডনের সিনহাসনে )আর পরিশেষের ইতিহাস তা সকলেরই জানা
সুতরং দেশের জন্য যারা নিজেদের সর্বস্য ত্যাগ করে, এমন কি জীবন কেও উৎসর্গ করতে যারা কার্পণ্য করেন নি। তাঁদের প্রতি আরএসএস বা বিজেপি র কতটা উদার সেটা বুঝতে গোলওকার সাহেবের একটা বক্তব্য তুলে ধরছি যেটা পড়লে মনে হবে উনি ইংরেজদেরই প্রতিনিধি ত্ব করছেন, বাস্তবে কিন্তু তাই
“ভেবে দেখা উচিত এর দ্বারা সম্পূর্ণ জাতীয় স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে কি না?.জীবন বলি দেওয়ার সাহায্যে দেশের স্বার্থে সর্বস্য ত্যাগ ব্যাপারে সমাজের চিন্তা কে বাড়িয়ে তলা যায় না. আজ
পর্যন্ত অর্জিত যাবতীয় অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে , সাধারণ মানুষ মনের মধ্যে এই অগ্নি দহন সহ্য করতে পারেন না.
তাই এখন বুঝতে পারছেন যে এই কারণে আজ পর্যন্ত কোনো স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্ম দিতে পারে নি আরএসএস, শুধু রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করাই একমাত্র লক্ষ্য, তাই এই ভণ্ডামি।