স্বাতী শীল,,চিন্তন নিউজ:২রা আগস্ট:- করোনা সংক্রমণ রোধে হু এর ‘টেস্টিং ও ট্র্যাকিং’ এর গাইডলাইনকে কেন্দ্র সরকার অতটা গুরুত্ব না দিলেও, এই ধারনাকে সম্পূর্ণরূপে পাল্টে নিয়ে কিভাবে নিজেদের সংকীর্ণ ও ভ্রান্ত ধর্মীয় স্বার্থে ব্যবহার করা যায় তার নৃশংস প্রমাণ দিল গোরক্ষক বাহিনী,আরো একবার। নয়ডার পর এবার গুরগাঁওতে গোমাংস পাচারকারী সন্দেহে এক ট্রাক চালককে হাতুড়ি দিয়ে মেরে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠল গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে এন সি আর এলাকার অন্তর্গত গুরগাঁও তে। ট্রাক চালকের নাম লোকমান। জানা গেছে যে ট্রাকে করে মোষের মাংস ডেলিভারি দিতে যাচ্ছিলেন তিনি কিন্তু গোমাংস পাচারকারী সন্দেহে তার ট্রাকের পিছনে ধাওয়া করে গোরক্ষক বাহিনী। প্রায় ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ধাওয়া করে এসে শেষ পর্যন্ত গুরগাঁও এর সবথেকে অভিজাত এলাকা গ্লিস্টেনিং টাওয়ার এর অদূরে ট্রাকটিকে ধরে ফেলে তারা।এরপর প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ এবং আমজনতার চোখের সামনে তাকে জোর করে ট্রাক থেকে নামিয়ে মারধর করা হয়।বারবার হাতজোড় করে কাতর অনুরোধ করা সত্ত্বেও কোনো কাজ হয়নি উপরন্তু তাকে হাতুড়ি দিয়ে নির্মমভাবে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে যে, লোকমানকে বাদশাহপুর গ্রামে নিয়ে গিয়ে আরো এক প্রস্থ নিগ্রহ করা হয়েছিল।সেখান থেকেই তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি একটি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ।
এ তো গেল ট্র্যাকিংয়ের কথা । এরপর আসা যাক টেস্টিং এ।
পরীক্ষাগারে ওই মাংস পরীক্ষা করার পর শেষ পর্যন্ত জানা যায় যে ,গরুর নয় এটি সত্যিই ছিল মোষের মাংস। অর্থাৎ পুরো ঘটনাটাই ঘটে কেবলমাত্র ভ্রান্ত সন্দেহের বশে।ট্রাক মালিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে, বিগত প্রায় পাঁচ দশক ধরে তাদের পারিবারিক মোষের মাংসের ব্যবসা। ট্রাকে সত্যিই কোন গরুর মাংস ছিল না।
সমগ্র ঘটনাতে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। প্রদীপ যাদব নামে একজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বলা যায়,এর পূর্বে ২০১৫ সালেও একইভাবে গোমাংস বাড়িতে রেখেছেন এই অভিযোগে আখলাক নামের এক প্রৌঢ়কে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল এই গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে। বারবার ধরে ঘটে চলা এই ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে, এদের কাছে মৃত প্রাণীর মূল্য থাকলেও জীবিত মানুষ নিতান্তই মূল্যহীন। তাই সন্দেহের বশে তাদেরকে পিটিয়ে মেরে ফেলতেও এরা দ্বিধা বোধ করে না।পেহলু খান, জুনেইদ একে একে তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে।