রাজ্য

অভুক্ত অসহায় মানুষের মুখে গ্রাস তুলে দিলেন চার মহিলা


সঞ্জিত দে: চিন্তন নিউজ: ৭ এপ্রিলঃ- ভারতে লক্ষ লক্ষ প্রত্যন্ত গ্রাম আছে সেই সব গ্রামে আদিবাসী দলিত হরিজন মুসলিম সহ নানা সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া বর্গের মানুষ বাস করেন। কেন্দ্র রাজ্য কোনো সরকারের মানচিত্রে এদের নাম আসে না তাই এরা সরকারের কৃপা থেকে বঞ্চিত থাকেন।দিন আনি দিন খাই এই মানুষেরা লক ডাউন ঘোষণার পর থেকেই অনাহার উপবাসে দিন কাটাচ্ছেন। এমনই এক গ্রামের ছবি আজ তুলে ধরা হচ্ছে আজ।

বিচিত্র ভৌগলিক সীমা রেখার মানচিত্রে অবস্থান চামটিমুখি গ্রাম লাগোয়া ডোববাড়ি গ্রাম। ভুটান সিকিম থেকে নেমে আসা দুই নদী জলঢাকা ও ডায়না নদীর সঙ্গমস্থলে এই গ্রাম।নদীর চর ধরে কয়েক কিলোমিটার পশ্চিমে হেটে গেলে লাটাগুড়ির গরুমারা অভয়ারণ্য। পূর্ব দিকের কোনাকুনি গধেয়ার কুঠি ফরেস্ট আবার জল ঢাকা নদীর দক্ষিন প্রান্তে কিছু পথ গেলেই পান বাড়ি রামসাই ফরেস্ট।

প্রশাসনিক দিক থেকে নাগরাকাটা ব্লক ধূপগুড়ি ব্লক ময়নাগুড়ি ব্লক। তিন ব্লকের কোনো আধিকারিক কস্মিনকালেও উঁকি দিয়ে দেখেন না এই গ্রামে। স্বাভাবিক কারনে সব দিক থেকে বঞ্চিত এই গ্রামের তিন শতাধিক মানুষ। লক ডাউনের জেরে অন্য গ্রামে বা শহরে গিয়ে মুজুরি করা বন্ধ।সুতরাং অনাহার ছাড়া গতি নেই কারো।এই গ্রাম থেকে তিন কিলোমিটার দুরে শালবাড়ি দুই নং গ্রামপঞ্চায়েতের নাথুয়া বাজার। ধূপগুড়ি ব্লকের ছোট গ্রাম পঞ্চায়েত।ডোব বাড়ি গ্রামের বাসিন্দাদের দু’ একজনের কাছে এই করুন অবস্থা জানতে পারেন নাথুয়ার চার মহিলা। সুমিত্রা সাহা রঞ্জু দে বিভা সাহা রত্না রায়। এই চার গৃহবধু ঘটনা শোনা মাত্র নিজেরা আলোচনা করে নারী শক্তি নাম দিয়ে সংগঠন তৈরি করেন। নাথুয়া বাজার এলাকার বিভিন্ন বাসিন্দাদের কাছে হাত পেতে সাহায্য চাইলেন।অনেকে দিলেন। সে সব নিয়েই পয়লা এপ্রিল রান্না করা খাবার ভাত ডাল শব্জি নিয়ে হাজির হলেন চামটিমুখি ডোববাড়ি গ্রামে। খাবার দেখে অনাহারে থাকা সব মানুষ এগিয়ে এলেন।গ্রামের এক ফাঁকা স্থানে পাত পেড়ে সবাই খেলেন। এক দিন এক বেলা নয় প্রতিদিন এভাবে রান্না করা খাবার নিয়ে আসছেন চার মহিলা সুমিত্রা সাহা রঞ্জু দে বিভা সাহা ও
রত্না রায়।

গ্রামের বাসিন্দাদের অধিকাংশ আদিবাসী এছাড়া কয়েকঘর মুসলিম রাজবংশী বিহারী সবই আছেন একাত্ম হয়ে। বিরোধ বিভাজনের ছায়া নেই এখানে। গ্রামের বাসিন্দা লীলা গোয়ালা বিজলি ও়ঁরাও মুকুল লোহার পার্বতী গোয়ালা প্রমুখ বলেন এই চার দিদি আমাদের কাছে অন্নপূর্ণা। এই দুর্দিনে প্রতিদিন আমাদের মুখে গ্রাস যোগার করে আনছেন।সরকারের সাহায্য কোনোদিন পাই নি।

এই বিষয়ে জলপাইগুড়ির জেলা শাসক অভিষেক তিওয়ারীকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেন নি এমন কি হোয়াটসাপে এস এম এস করে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে সেটাও জানা যায়নি ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।