দেশ

৪টি রেলওয়ে স্টেশনকে পিপিপি মডেলের আওতায় আনলো রেলমন্ত্রক


কাকলি চ্যাটার্জি, চিন্তন নিউজ, ১৭ জুলাই: ৪টি রেলওয়ে স্টেশনকে পিপিপি মডেলের আওতায় আনলো রেলমন্ত্রক। নাগপুর, গোয়ালিয়র, অমৃতসর ও সবরমতী এই চারটি স্টেশন পূনর্নির্মান ও আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলমন্ত্রক। পিপিপি মডেল অনুসরণ করে আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে এবং পরিকল্পনায় অংশগ্ৰহণকারী হিসেবে নয়টি সংস্থা নির্বাচিত হয়েছে। চারটি স্টেশন আধুনিকীকরণের মোট ব্যয় আনুমানিক ১৩০০ কোটি টাকা। ঐ চারটি স্টেশনকে ‘রেলপোলিস’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত রেলস্টেশনগুলো পুনর্নির্মাণের জন্য ইন্ডিয়ান রেল স্টেশন কর্পোরেশন লিমিটেড (আইআরএসসিডি) ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আরএফকিউগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল পিপিপি তে অংশগ্রহণ করার জন্য। আবেদনকারীদের মধ্যে নয়টি সংস্থাকে বেছে নেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে খবর। সংস্থাগুলো হল জি আর ইনফ্রপ্রজেক্টস, কল্পতরু পাওয়ার ট্রান্সমিশন, জিএমার বিজনেস অ্যান্ড কনসালটেন্সি, অ্যাঙ্কোরেজ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিংস, আইএসকিউ এশিয়া ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্টস, মন্টি কার্লো, জেবিবি ইনফ্রাস্ট্রাকচার, কল্যাণ টোল অবকাঠামো এবং কিউব কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং। আইআরএসসিডি এক বিবৃতিতে বলেছে, “২২জুন, ২০২০ আইআরএসসিডি ঐ চারটি রেলস্টেশনের আরএফকিউ দরখাস্তগুলো দেখেছে ও বর্তমানে কোভিড১৯ পরিস্থিতি সত্ত্বেও ৩২টি সংস্থা আধুনিকীকরণের কাজে আগ্ৰহ প্রকাশ করেছে যা অভাবনীয়।”

চারটি স্টেশন আধুনিকীকরণে মোট ব্যয় হবে আনুমানিক ১৩০০ কোটি টাকা। কমার্শিয়াল কাজে ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ ৫.৪ মিলিয়ন বর্গফুট। মোট আবেদনকারী ২৯ জনের মধ্যে ছ’জন নাগপুরের জন্য, আটজন গোয়ালিয়রের জন্য, ছ’জন অমৃতসর এবং ন’জন সবরমতীর জন্য নির্ধারিত হয়েছেন। নির্ধারণের অন্যতম প্রধান শর্ত হল স্টেশনে যাত্রীদের জন্য পূর্ব নির্ধারিত চার্জ বজায় রাখা।

আইআরএসসিডি কমার্শিয়াল কারণে ব্যবহারের জন্য ৬০ বছর ও আবাসিকদের ব্যবহারে ৯৯ বছরের জন্য জমি লিজ দেবে। প্রথম এনডিএ সরকারের সময়ে ৪০০টি রেলস্টেশন আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা ঘোষণা করে। এই প্রকল্পের ব্যয় বহন করার জন্য স্টেশনের পার্শ্ববর্তী স্থানগুলি কমার্শিয়ালভাবে ব্যবহার করার কথা হয়েছিল। স্টেশনগুলোকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৮ অক্টোবরে অ্যাপেক্স থিঙ্ক ট্যাঙ্ক নীতি আয়োগ কেন্দ্রের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে রেলপথ মন্ত্রককে যুক্ত করেছিল। একদল আমলা ৫০টি স্টেশন আধুনিকীকরণের নির্দেশ দেয়।

মহামারী আক্রান্ত দেশে কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। ইতিমধ্যেই ১০৯ টি রুটে ১৫১ টি বেসরকারি রেল চালানোর অনুমতি দিয়েছে রেলমন্ত্রক। রেলপথ জালের মত বিছিয়ে রয়েছে গোটা দেশ জুড়ে। আন্তর্জাতিক সংস্থা হুন্ডাই, সিমেন্স এবং দেশের মধ্যে টাটা ও আদানি গ্ৰুপ আগ্ৰহী বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ট্রেন চালাতে। বামপন্থী দলগুলো এবং কংগ্ৰেসও সর্বত্র বিরোধিতা করছে সরকারি সিদ্ধান্তের। রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল যতই বেসরকারি ব্যবস্থায় যাত্রীস্বাচ্ছন্দ‍্য ও নিরাপত্তার দোহাই দিন না কেন বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ অন্য কথা বলে। রেলের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ক্যাটারিং পরিচালিত হওয়ার সময় খাবারের গুণমান এবং বর্তমানে বেসরকারি সংস্থার হাতে পড়ে গুণমানের আসমানজনিত ফারাক লক্ষ্য করা যায়। রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদবের দাবি এর ফলে বিনিয়োগের দরজা খুলে গিয়ে রেলের আয় বাড়বে। এ যেন সেই চোরকে বাঁচাতে ডাকাত ডেকে আনার মত ব্যাপার। দেখা যাক, লড়াই আন্দোলনের চাপে সরকারি সিদ্ধান্ত কতটা প্রভাবিত হয়! কতটা ঠেকানো যায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিপিপি মডেলের প্রয়োগ!!


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।