দেশ

অবশেষে ১৪ আগস্ট রাজস্থান বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে বাধ্য হলেন রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র—–


কাকলি চ্যাটার্জি- চিন্তন নিউজঃ ৩১শে জুলাই:- মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের একাধিকবার দরবার করার পর অবশেষে সবুজ সংকেত রাজ্যপালের দিক থেকে, রাজস্থানের রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র বাধ্য হলেন ১৪ আগস্ট রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশন ডাকতে। গেহলট চান শচীন পাইলটের অনুগামী ১৮ জন বিধায়ক যোগ দিন এই অধিবেশনে। রাজস্থান বিধানসভার বর্তমান সদস্যসংখ্যা ২০০। কংগ্ৰেসের ১০৭ জন নির্বাচিত বিধায়কের মধ্যে পাইলটসহ তাঁর অনুগামী ১৮ জন প্রকাশ্যে দলীয় হুইপ অস্বীকার করে কংগ্ৰেস দলের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন নি। গতকাল হঠাৎই গেহলট উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলটের অনুগামীদের কাছে যান এবং তিনি মনে করেন যেহেতু ঐ বিধায়করা কংগ্রেসের প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন সুতরাং তাঁরা বিধানসভা অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন। তিনি বলেন,”আমি এখনও এই বিদ্রোহী বিধায়কদের কংগ্রেসের প্রতীকে নির্বাচিত হওয়ার জন্য অধিবেশনে যোগ দিতে আহ্বান জানাচ্ছি।” পাইলটের সঙ্গে তীব্র মতপার্থক্যের সময়ও গেহলট বলেছিলেন যে পাইলট ও তাঁর অনুগামীদের সরকার কে সমর্থন জানানোর জন্য রাজী করানোর দায়িত্বও তাঁর। তিনবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পরে রাজ্যপাল শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েছেন ১৪ তারিখ বিধানসভা অধিবেশন ডাকতে।

গেহলট জানান তাঁর সরকার এবং বিধায়করা যাঁরা তাঁকে সমর্থন করছেন তাঁদের প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে। তিনি আরও বলেন, ” আমি খুশি যে শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাল বিধানসভা অধিবেশন ডাকার অনুরোধ গ্ৰহণ করেছেন। সবাই বুঝে গেছেন ঘোড়া কেনাবেচায় আমরা অংশগ্রহণ করব না, আমরা আমাদের পূর্ণ মেয়াদ শেষ করব। কংগ্রেসের সঙ্গে বহুজন সমাজ পার্টির ছয়জন বিধায়ক আছেন যাঁরা ২০১৮ এর বিধানসভা নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন দলে যোগ দেন। এই বিষয়টি এখন বিএসপিও বিজেপির বিধায়কদের দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে।” গতকাল রাজস্থান হাইকোর্ট স্পীকার, সচিব এবং বহুজন সমাজ পার্টির ছয় বিধায়কের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করে। এই ছয়জন বিধায়ক হলেন সন্দীপ যাদব(তিজা), ওয়াজিব আলি( নগর), দীপচাঁদ খেরিয়া(কিশানগড়), লখন মিনা (করৌলি) এবং রাজেন্দ্র গুধা (উদয়পুরওয়া)।

দিল্লির মর্জিকে প্রাধান্য দিয়ে রাজ্যপাল দীর্ঘদিন ধরে আটকে রেখেছেন বিধানসভা অধিবেশন। ক্ষমতাসীন দল পাইলট শিবিরের তীব্র বিরোধিতা সত্বেও কী এক না বলা কারণে পিছিয়ে দিচ্ছিলেন অধিবেশন। কখনও মহামারীর কারণে কখনও আদালতের শরণাপন্ন হয়ে। মহামারীর কারণে বাদ যায় নি ট্রাম্পের সফর, বাদ যাচ্ছে না রামমন্দিরের ভিতপূজা! আসলে সবকিছুই ঘটছে অমিত শাহর নীরব নির্দেশে। হরিয়ানায় বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের আটকে রেখে দর কষাকষি, ঘোড়া কেনাবেচা মিটিয়ে নিতে তৎপর রাজস্থানের বিরোধী দল। এজন্য যে একটু সময় লাগবেই! সেজন্যই সময় কাটানো নানা অজুহাতে। এমনিতে বিজেপির ঝুলিতে ৭২ টি আসন। পাইলট শিবিরের ১৯ ধরেও তো হিসেব মিলছে না। এজন্যই ছোট ছোট আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে বোঝাপড়ার গোপন প্রয়াস চলছে। এখন শুধুই অপেক্ষা! ১৪ আগস্টের দিকে তাকিয়ে আছে রাজস্থানবাসী সহ সমগ্ৰ দেশবাসী। শুরু হোক বিধানসভার অধিবেশন, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ আত্মবিশ্বাসী অশোক গেহলটের অগ্নিপরীক্ষায় জয়লাভের ওপর নির্ভর করে আছে রাজস্থানের রাজনীতির ভবিষ্যতের চালচিত্র।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।