সঞ্জিত দে:ধূপগুড়ি: চিন্তন নিউজ: ৮ অক্টোবর ঃ- দিনে পুলিশ রাতে কাউন্সিলর রাস্তা আটকে চাঁদা তুলছেন। পুলিশ কেস দেবার ভয় দেখিয়ে তোলা আদায় করল বাইক চালকের থেকে তৃনমুল কাউন্সিলর পূজার নামে চাঁদা তুললেন।একই দিনে দিনে রাতে দুই ছবি দেখাগেল বৃহস্পতিবার ধূপগুড়িতে।দুটি ঘটনা নিয়ে সরগরম এলাকা।
ধুপগুড়ি শহরের চাঁদার জুলুম, রীতিমতো ধূপগুড়ি থানা থেকে ঢিল ছোড়া দুরুত্বে রাস্তার ওপর চেয়ার লাগিয়ে রাস্তা অবরোধ করে চাঁদা তুলছে শাসক দলের কাউন্সিলর, অভিযোগ স্থানীয়দের। ঘটনায় রিতিমত বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
পূজার আর দেরি নেই, শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত পূজা উদ্যোক্তারা । করোনা আবহে গত বছর থেকে সেরকম বড়ো করে পূজার আয়োজন করা হচ্ছে না ধূপগুড়িতে। তবে এর মধ্যেই ধূপগুড়ি থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে রাস্তা আটকে চাঁদা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ খোদ ধূপগুড়ি পৌরসভার ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুজাতা দে সরকার সন্ধ্যা হতেই পাড়ার মহিলাদের নিয়ে রীতিমতো চেয়ার পেতে চাঁদা তুলছেন। যেখানে প্রায় প্রতিটি পূজা কমিটিকে ৫০,০০০ ( পঞ্চাশ হাজার) টাকা করে দেওয়া হচ্ছে । সেখানে থানার পাশেই শাসকদলের একজন মহিলা কাউন্সিলর রাস্তা আটকে চাঁদা তুলছেন এটা মানতে পারছেন অনেকে। অনেকের মতে এতে দূর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে। অনেকের দাবি, গ্ৰামে গঞ্জে অনেকে পূজা করে, দুই একটি গাড়ি গেলে তারা চাঁদা তুলে। সেক্ষেত্রে পুলিশ গিয়ে রীতিমতো লাঠি উঁচিয়ে তাদের তাড়া করে সডরিয়ে দেয় বা তুলে নিয়ে আসে । অথচ থানার পাশে যখন রাস্তা আটকে চাঁদা তোলা হচ্ছে তখন পুলিশ নিশ্চুপ। তবে কি শাসকদলের কাউন্সিলর বলেই দেখেও না দেখার ভান করছে পুলিশ।
কারণ যেই মুহুর্তে রাস্তা আটকে রীতিমতো গাড়ি থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে, সেই সময় একটি পুলিশ ভ্যান সেই রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলো। দেখা গেল সেই জ্যামের মধ্যে আটকে পড়েছে সেই পুলিশ আধিকারিকের গাড়ি। এক এ এস আই গাড়ি তে বসে থাকলেও চাঁদার জুলুমকারীদের কোনভাবে রাস্তা থেকে সরানোর ব্যাপারে সাহস দেখান না।যার কারনে আরও প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে, তাহলে কি পুলিশ মদতেই রাস্তা অবরোধ করে চাঁদা তোলা হচ্ছে।
এই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ধূপগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তৃণমূল জেলা সম্পাদক রাজেশ কুমার সিং বলেন, “এবার ৪১ টি পুজো হচ্ছে। প্রত্যেক কমিটিই যাতে টাকা পায় পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে জানিয়েছি। ধূপগুড়ি ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুজোও টাকা পেয়েছিল।” তবে রাস্তা আটকে টাকা তোলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমার কাছে এখনও পর্যন্ত এরকম কোনও খবর আসেনি। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর করছি।”
পথ চলতি স্থানীয় বাসিন্দা নির্মল রায় দুলাল বসাক বলেন, “এটা তো জুলুমবাজি হচ্ছে। কী আর বলা যায়। রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলিকে টাকা দিচ্ছে। তারপরও সাধারণ মানুষের থেকে এইভাবে টাকা তোলার কোনও মানে আছে কী! ফূর্তি করার জন্যই টাকা তোলা হয়। সাধারণ মানুষের পরিস্থিতি এই সময় এমনিতেই খারাপ। তারপর টাকা তোলার জন্য চাপ দেওয়া হলে আর কী বলার আছে।”
চাদাতোলা দলের সদস্যরা বলেন, আমরা পুলিশের কাছে অনুমতি নিয়েই রাস্তায় চাঁদা তুলছে। এমনকি এই রাস্তা দিয়ে পুলিশ গেলে তাদের থেকেও চাঁদা তোলা হচ্ছে।
যদিও এই বিষয়ে পুলিশ আধিকারিক এর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।অন্যদিকে শহর থেকে জলপাইগুড়ি শিলিগুড়ি যাবার অভিমুখে জাতীয় সড়কের উপর স্টেশন মোরে দিনের বেলায় পুলিশ চেকিং পয়েন্টে বসে এক গ্রাম্য যুবক বাইক আরোহী কে আটকে রীতিমতো দর কষাকষি করে হাত পেতে টাকা নিচ্ছে পুলিশ। এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায়। মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা নিচ্ছে পুলিশ। এমন ভিডিও ভাইরাল হওয়াতে চাপান উতর শুরু হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের অন্দরমহলে।
ধুপগুড়ি স্টেশন মোড়ে মোটর বাইক আটকে প্রকাশ্যে টাকা নিচ্ছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার এমন একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক বাইক আরোহীকে আটকে মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা চাওয়া হচ্ছে। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা আমরা যাচাই করিনি।
বাইক আরোহী প্রথমে ৮০০ টাকা দিতে চাইলে বাইক রেখে যেতে বলেন। পরে আরও ২০০ টাকা বাড়িয়ে মোট ১০০০ টাকা দিলে ঐ ব্যাক্তিকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। আর এই ঘটনার দৃশ্য পাশে থাকা এক যুবক মোবাইলে ক্যামেরা বন্দী করে। সেই ভিডিওই সোসাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও ভাইরাল হতেই অস্বস্তিতে জেলা পুলিশ মহল।
ঘটনায় পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন আমাদের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে ঘটনার তদন্ত হবে। তিনি জানান সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক কিছুই ভাইরাল হয়। কিন্তু তা এভিডেন্স নয়। তদন্ত হবে সেটা দোষী সাব্যস্ত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।