দীপশুভ্র সান্যাল: চিন্তন নিউজ:৫ই অক্টোবর:– ডিওয়াইএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির ১৯ তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো ২-৪ অক্টোবর হল অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও কবি শঙ্খ ঘোষ নগর (রায়গঞ্জ) ও শহীদ কমরেড মইদুল মিদ্দা নগর (বিধান মঞ্চ)। প্রকাশ্য সমাবেশের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের সম্মেলনের শুভ সূচনা করেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমরেড মানিক সরকার, বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সম্পাদক প্রাক্তন সাংসদ কমরেড মোহাম্মদ সেলিম সহ ডিওয়াইএফআই রাজ্য নেতৃত্ব। প্রকাশ্য সমাবেশে কমরেড মানিক সরকার বলেন ত্রিপুরায় ফ্যাসিস্ট সরকার রাজ্যের ক্ষমতায় আসীন দেশেও এরা ক্ষমতায় রয়েছে বিভেদের রাজনীতির মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার এদের প্রধান লক্ষ্য। গণতন্ত্রবিরোধী এই ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে ত্রিপুরায় যখন বামপন্থীরা কঠিন লড়াই লড়ছে তখন পশ্চিমবঙ্গ থেকে দিদিমণি ত্রিপুরায় গিয়ে লোক দেখানো কিছু কর্মসূচি করে মিডিয়ায় ফোকাস পেতে চাইছে। দেশ বিক্রির চক্রান্তে লিপ্ত বিজেপি বুলডোজার দিয়ে সিপিআই এম এর পার্টি অফিস ভেঙে দিচ্ছে আক্রান্ত হচ্ছেন ডিওয়াইএফআই নেতৃবৃন্দ। ফ্যাসিস্ট বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বামপন্থীরা বিজেপির কথায় কিছুটা বিভ্রান্ত ত্রিপুরার মানুষ কে সম্প্রদায়িক বিজেপির প্রকৃত স্বরূপ সামনে নিয়ে এসে লড়াইয়ের ময়দানে একত্রিত করছেন।
বিধান মঞ্চে ১৯ তম সম্মেলনের উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রাক্তন সর্বভারতীয় সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন তারা যখন যুব আন্দোলন করতেন আর এখনকার সময়ে যারা যুব আন্দোলন করেন দুই সময়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। সংগঠনে সব ধরনের যুবককে নিয়েই আমাদের পথ চলা তাদের মধ্যে কেউ ভালো সংগঠক কেউ ভালো বলতে পারেন কেউ মিছিলে ভালো শ্লোগান দিতে পারেন আবার কেউ সংগঠনের জন্য দিনরাত প্রাণপাত পরিশ্রম করতে পারেন আবার কারো ডাকে বহু যুব একসাথে জড়ো হন। সকলকে নিয়েই আমাদের সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে কিন্তু কে পথে থাকবে আর কার রথে থাকাটা জরুরী সে সিদ্ধান্ত সঠিক ভাবে নেতৃত্বকে গ্রহণ করতে হবে। শুধু মধ্যবিত্ত অংশের যুবদের মধ্যেই না, গ্রাম পাড়া-মহল্লা চা বাগান বনবস্তি শহরের শ্রমজীবী অংশের গরিব যুব সকলের প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠতে হবে ডিওয়াইএফআই কে। সীমাবদ্ধতা ছেড়ে সংগঠনকে সমাজের সকল অংশের যুবদের মধ্যে নিয়ে যেতে হবে শুধু টেট এসএসসি সরকারি চাকরির পরীক্ষা নিয়ে আন্দোলন নয় গ্রামে ১০০ দিনের কাজ, চা বাগানে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনেও আওয়াজ তুলতে হবে ডিওয়াইএফআই কে।
সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা যুব আন্দোলনের নেতৃত্ব ছাড়াও বিভিন্ন বামপন্থী যুব আন্দোলনের নেতৃত্ব ও এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখেন। তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষে সম্মেলন মঞ্চ থেকে সর্বসম্মতিক্রমে ৯১ জনের নতুন রাজ্য কমিটি ও ২৫ জনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর গঠিত হয়। সম্মেলন ১৯ বছর বয়সী রিয়া খাতুন বীরভূম জেলা থেকে সর্বকনিষ্ঠ প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেন। প্রতিনিধিদের মধ্যে রাজনৈতিক কারণে শাসকদলের মিথ্যা মামলার জেরে গত ৯ বছর ধরে আত্মগোপন করে থাকা হুগলি জেলার যুবনেতা বিশ্বজিৎ চৌধুরী ও সর্বোচ্চ ৮৪ দিন কারা বরণ করা পশ্চিম বর্ধমানের যুবনেতা হেমন্ত প্রভাকর ও একমাত্র জনপ্রতিনিধি আলিপুরদুয়ারের জীবন সরকার প্রতিনিধিত্ব করেন। সম্মেলনে ৪৫৩ জন প্রতিনিধি ও ১০ জন দর্শক উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলন মঞ্চ থেকে সংগঠনের ৫২ বছরের ইতিহাসে প্রথম যুবতী সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহা সভাপতি, কলতান দাশগুপ্ত যুবশক্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত সহ সম্পাদক, অপূর্ব প্রামানিক কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন।