শাশ্বতী ঘোষাল, চিন্তন নিউজ, ১৭ এপ্রিল: দূর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ডিপিএল কারখানার অস্তিত্ব বিপন্ন। ১৯৬০ সালে গড়ে ওঠা দূর্গাপুরের ডিপিএল কারখানাটি এক কালে দূর্গাপুরের গর্ব ছিল। কিন্তু বর্তমানে কারখানাটি অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। এই সংস্থার আটটি ইউনিটের মধ্যে শুধু সপ্তম ও অষ্টম ইউনিট চালু রয়েছে। কোকওভেন প্ল্যান্ট বন্ধ হয়েছে ২০১৫ সালের জুনে।
লোকসানে চলা ডিপিএল কে ঢেলে সাজানোর যে প্রক্রিয়া রাজ্য সরকার গ্রহণ করেছিল তাতে এই কারখানাটি লুপ্ত হয়ে যাবার মুখে। ২০১৭ সালের শেষ দিকে রাজ্য মন্ত্রীসভা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে ডিপিএলের বিদ্যুত উৎপাদন, বন্টন ও সংবহন বিভাগ অন্য বিদ্যুত উৎপাদন সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হবে। গত ১লা জানুয়ারি থেকে সেই প্রস্তাব কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মালিকানা চলে গিয়েছে
পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুত উন্নয়ন নিগমের হাতে। ফলে শুধু নাম ছাড়া ডিপিএলের আর কোনো অস্তিত্ব বর্তমানে নেই।
জানা গিয়েছে যে অন্য সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করতে হলে কর্মী সংখ্যা কম করতে হবে। তাই ৪৫ বছরের বেশী বয়সী কর্মীদের জন্য স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু এর প্যাকেজ নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বিভিন্ন কর্মী সংগঠন। অনেক কর্মীকে রাজ্যের অন্যত্র অন্য শিল্প সংস্থায় পাঠানোর সিদ্ধান্তেও কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া প্রায় তিন হাজার ঠিকা শ্রমিকের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে শ্রমিক সংগঠন গুলির অভিযোগ।
মৃত কর্মীদের নিকটাত্মীয়দের এখনও নিয়োগ না করা নিয়েও মাঝে মাঝেই আন্দোলন হয়। ডিপিএল কোয়ার্টার নিয়েও শাসক দলের একাংশ বেআইনি কারবার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।
প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন ডিপিএলের অস্তিত্ব এ ভাবে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেন প্রয়াত মৃণাল বন্দোপাধ্যায় বিদ্যুত মন্ত্রী থাকার সময় ডিপিএলের সংস্কার হয়। তারপর থেকে ডিপিএল ক্রমাগত ক্ষয়ের দিকে এগিয়ে চলেছে।
তবে শিল্পাঞ্চলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে যে ডিপিএল প্রসঙ্গে তৃণমুল খুব একটা স্বস্তিতে নেই। এখন দেখার ডিপিএল তার হারানো গরিমা ফিরে পায় কিনা।