দেবু রায়, নিজস্ব প্রতিবেদন: চিন্তন নিউজ:১৪/০৮/২০২২– আসলে বিজেপি জন্মলগ্ন থেকেই সংবিধান এর বিরোধিতা করতো তারা আসলে চিরটাকাল ভারতীয় সংবিধানের বদলে, মনু বাদকে ধীরে -ধীরে রাষ্ট্র ব্যবস্থা র মধ্যে প্রবেশ করিয়ে সংবিধানের মূলধারাকে বদলে দিতে চেয়েছে ।
গোলওয়ারকার এর “bunch of thoughts “বই থেকে কয়েকটি লাইনের উল্লেখ করছি , যেটা শুধুমাত্র গোলওয়ারকার এর রচনা সংকলন নয়, প্রতিটা আরএসএস এর কর্মীদের কাছে বাইবেল তুল্য। গোলওয়ারকার সাহেব যা লিখেছিলেন “আমাদের সংবিধান স্রেফ কিছু পশ্চিমী দেশের অনুকরণ, এক কিম্ভুতকিমাকার ও নানা ধরণের উপাদানের একত্রিকরণ ছাড়া কিছুই নয় । এই সংবিধানের এমন কিছু উপাদান নেই যেটা আমাদের নিজস্ব বলে বলা যেতে পারে। আমাদের জাতীয় উদেশ্য কি?. হিন্দুদের জীবনের মূল সুর কি সেগুলি পুরো অস্বীকার করা হয়েছে “
আসলে ওরা চাইছে এই সংবিধানের বদলে মনু স্মৃতি চালু করতে । যেখানে শুদ্র হলো একটি অস্পৃশ্য জাত, তাঁদের কাজ হলো অন্য তিন শ্রেণীর সেবা করা , যেখানে নারীদের হীন হিসাবে দেখানো হয়েছে । ১৯৪৯সালের ৩০ নভেম্বর সংগঠন এর মুখপত্র organiser এর সম্পাদকীয় নিবন্ধে একটা চমকপ্রদ লেখার কয়েকটি লাইন একটু পড়ুন,
“আমাদের বর্তমান সংবিধান রচনা হবার অনেক আগে প্রাচীন ভারতে আমাদের সংবিধানছিলো । সেটার কোনো উল্লেখ নেই বর্তমান সংবিধানে। মনু স্মৃতিকে সারা বিশ্ব সমাদর করে বরণ করে , শ্রদ্ধার চোখে দেখে, এবং আপনা থেকেই সেগুলোর প্রতি আনুগত্য দেখায়, শুধু তাই নয় তাঁর অনুশাসনকে মেনেও নিয়েছে ।
কিন্তু ব্যাতিক্রম আমাদের দেশের সংবিধান রচয়তিরা, তাঁদের কাছে মনুর অনুশাসনের কোনো মূল্য নেই। ” স্বাধীন ভারতে মনু আইন আরএসএস তাঁর দার্শনিক , পথপ্রদর্শক সাভারকার এর কিছু উক্তি দিতে হচ্ছে, সাভারকার :–
“আমাদের হিন্দু জাতির কাছে বেদের পরেই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য হলো মনু সংহিতা ।
প্রাচীন কাল থেকেই এই মনু সংহিতাকে অনুসরণ করা হয়েছে । যেখানে শত -শত বছর ধরে এই ধর্মগ্রন্থটি আমাদের দেশের আধ্যাত্মিক এবং দৈব যাত্রা পথের সারসংকলন করেছে । যা আজও কোটি কোটি হিন্দু তাঁদের জীবনে ও কাজকর্মে সেই অনুশাসন পালন করে আসছে , আর সেটাই হলো হিন্দু আইন আর আমাদের এই
সংবিধান যেটা একজন শুদ্রর দ্বারা রচিত । সেটাকে কোনো হিন্দু কেন মানবে? “
তাহলেই বুঝুন ওরা মনু আইন দেশে চালু করে দেশের মধ্যে কি ধরণের সভ্যতা,তৈরি করতে চাইছে হিন্দুত্ব বাদী শিবির, যেখানে শুদ্র (দলিত )দের কাজ হবে উচ্চ বর্ণের সেবা করা , যেখানে মহিলা দের কাজ পুরুষ মানুষ এর সেবা করা ,মনোরঞ্জন করা আর সন্তান জনদেয়া তাঁদের পালন করা (মনুর বিধান অনুযায়ী )
আর আজ রাষ্ট্রের প্রধানরা গণতান্ত্রিক, ধর্ম নিরপেক্ষ সংবিধান এর শপথ নিয়েও আরএসএস এর অনুগত সেনিক হিসাবে নিজেদের জাহির করতেই তারা বেশী স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন মোদীজি যদি হিন্দু জাতীয়তাবাদী হন । তাহলে স্বাভাবিকভাবেই মুসলিম জাতীয়তাবাদী, খ্রিস্টান জাতীয়তাবাদী ইত্যাদির জন্ম নেবে তখন কি এই দেশটা এক থাকবে?. এখন যেমন আমরা বলি আমরা ভারতীয় এটা আমাদের গর্ব তখন কি সেটা থাকবে ?. পুরোটাকেই তো বিজেপি ভেঙে চুরমার করে দিচ্ছে। আমার এই লেখাটার মূল উদেশ্য হলো বিজেপি (বকলমে আরএসএস )আর স্বরূপ কে আপনাদের সামনে তুলে ধরা অন্যথায় দেশের একতা , সমবৃদ্ধি কোনো কিছুই হবে না, আমরা থাকবো ধর্ম নিয়ে, আর বিজেপি র ভন্ড দেশ ভক্তি নিয়ে, আর অন্য দিকে দেশটাকে , সম্পদ গুলোকে সস্তায় আম্বানি /আদানি দের মতন কর্পোরেট দের হাতে তুলে দিয়ে সাধারণ মানুষকে কর্পোরেটদের দাসে পরিণত করবে।