চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:৮ই সেপ্টেম্বর:-মহারাষ্ট্রের নেরুলেই তৈরী হচ্ছে ভারতের প্রথম ডিটেনশন ক্যাম্প।।
ডিটেনশন ক্যাম্প বা ডিটেনশন সেন্টার শব্দবন্ধটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে নাৎসি জার্মানির সেই ডিটেনশন ক্যাম্পের মর্মান্তিক স্মৃতি।কিভাবে হিটলার সেই সময় ইহুদীদের উপর নারকীয় হত্যালীলা চালিয়ে ছিল তা আজ ইতিহাস।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে সাধারণ নাগরিকদের বন্দী করে রাখতে রাজ্যে রাজ্যে প্রধান শহরগুলিতে
কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে তৈরি হতে চলেছে ডিটেনশন সেন্টার।গত জুলাইয়ে দেওয়া মোদী সরকারের সেই আদেশের বলেই এবার মহারাষ্ট্রের নবি মুম্বাইয়ে ‘অনুপ্রবেশকারী’জন্যে সম্ভবত প্রথম ডিটেনশন সেন্টার তৈরী হতে চলেছে।ইতিমধ্যে জমি চিহ্নিতকরণ হয়ে গেছে।গত সপ্তাহেই মুম্বাইয়ের পরিকল্পনাকারী সংস্থা সিডকোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এমনটাই যে হতে যাচ্ছে তার আঁচ আগেই পাওয়া গিয়েছিল, যখন গত সপ্তাহে অসমে এনআরসি তালিকা প্রকাশিত হবার পর নাগরিকত্ব থেকে বাদ পড়েছিলেন সে রাজ্যের প্রায় ১৯লক্ষ মানুষ।যাদের আগামী ৯০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে বিদেশি ট্রাইব্যুনালেে।
যদিও মহারাষ্ট্রের নেরুলে ঐ জমিটি নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।রাজ্যের প্রিন্সিপাল সচিব স্বরাষ্ট্র অমিতাভ গুপ্ত জানান, গত জুলাই মাসে জমি খোঁজার কাজ শুরু করতে বলে সরকার এবং সব রাজ্যকেই এ ব্যাপারে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।২০১৯ মডেল ডিটেনশন ম্যানুয়ালের নির্দেশ মতো প্রতিটি জেলায় শহরে,যেখানে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত চেকপোস্ট রয়েছে সেখানে একটি করে ডিটেনশন সেন্টার খোলা র জন্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নির্দেশ জারি করে।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ভোটের প্রচার পর্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ গোটা দেশে এনআরসি চালুর প্রতিশ্রুতি দেন ও নির্বাচনী ইস্তেহারেও তা প্রকাশিত হয়।এই পর্বে বিজেপির সহযোগী দল শিবসেনা তাতে সহমত ছিল।গত রবিবারই শিল্পমন্ত্রী অরবিন্দ সাওয়ান্ত এনআরসি কার্যকরের দাবি জানান।কারন হিসেবে উঠে আসছে মুম্বাই তে বহু অনুপ্রবেশ কারী,মূলত বাংলাদেশী মানুষ থাকার কথা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানান যে এই বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ কারীদের দেশে ফেরত পাঠানো একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।সেই কারণে শহরে ডিটেনশন সেন্টার থাকা অত্যন্ত জরুরী।তার মতে ডিটেনশন সেন্টার গুলি জেলের মতো হবে না, তাতে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে।একই পরিবারের লোকজনকে একটি সেন্টারেই রাখা হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কয়েক প্রজন্ম ধরে এদেশে বাস করা মানুষ জন কেন এদেশ ছাড়বে,কেনই বা যাবে ডিটেনশন সেন্টারে?এই ধরনের ক্যাম্প গুলির পরিবেশ এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি কেমন হতে পারে তা সাধারণ মানুষ জানে।এই ডিটেনশন সেন্টার তৈরির নির্দেশ তাই উস্কে দিচ্ছে দেশভাগের সময় বিভিন্ন ছিন্নমূল মানুষের করুন অভিজ্ঞতা যা এখনও এদেশের বিশেষত এরাজ্যের মানুষ বহন করে বেড়াচ্ছে।