রাজ্য

বিকল্প আয়ের ছদ্মবেশের আড়ালে চা বাগানের দখল নিচ্ছে প্রোমোটার।।


চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:১লা নভেম্বর:–বিকল্প আয়ের ছদ্মবেশের আড়ালে চা বাগানের দখল নিচ্ছে প্রোমোটার।।ধুঁকতে থাকা চা শিল্প অন‍্যদিকে অনাহার ক্লিস্ট শ্রমিকদের বিকল্প আয়ের প্রস্তাবের আড়ালে প্রোমোটারদের উত্তরবঙ্গের চা বাগান গুলোর জমি দখলের  ছাড়পত্র দিলো রাজ‍্যসরকার।এই প্রস্তাবের লক্ষ্য চা শিল্পের উন্নতির পাশাপাশি শ্রমিকদের বিকল্প আয়ের ব‍্যবস্থা করা।

সুদীর্ঘ পূজোর ছুটি কাটিয়ে বৃহস্পতিবার মুখ‍্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে’টি ট‍্যুরিজম এন্ড এ্যালায়েড বিজনেস পলিসি-২০১৯’ এই সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছে টি বোর্ড ও চা শিল্প।
উত্তরবঙ্গের চা বাগান গুলিকে মোট জমির ১৫% বা ১৫০ একরে অন‍্য ব‍্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হোলো। তার মধ‍্যে এই ১৫% জমির ৪০% এ কাঠামো গড়তে পারবে সরকার।

প্রকৃতপক্ষে উত্তরবঙ্গের চা বাগান গুলিকে প্রোমোটারদের কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়া হলো।এই সিদ্ধান্ত জানান রাজ‍্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়।এই পরিকাঠামো গড়ার ক্ষেত্রে নামমাত্র শর্তও আরোপ করা হয়েছে।যেমন চা চাষের এলাকা কমানো যাবেনা, শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবেনা,।এছাড়া বিকল্প জীবিকা হিসেবে করা যাবে পর্যটন, বৃক্ষরোপন, পশুপালন,জলবিদ্যুৎ, অপ্রচলিত শক্তি,সামাজিক পরিকাঠামো বা পরিষেবার মতো ব‍্যাবসা।ঐ উদ্বৃত্ত জমির ৪০% এ গড়া যাবে রিসর্ট, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ইত্যাদি।

এই সিদ্ধান্ত কিন্তু হঠাৎ নেওয়া হয়নি।এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ার আগেই পাহাড় , তরাই ডুয়ার্সের চা বাগানের জমিতে পড়েছে পর্যটনের নামে প্রোমোটার এর থাবা। এর বিরুদ্ধে শ্রমিকদের মধ‍্যে তৈরি হচ্ছিল ক্ষোভ। চা বাগানের উন্নতির নামে গালভরা প্রতিশ্রুতিতে শ্রমিকরা ভোলেননি। এইসব চা বাগানে, পর্যটকদের পরিষেবা ও রেস্টুরেন্টে কাজের জন‍্যে এই চা শ্রমিকদের নিয়োগ করা হলেও তাদের শ্রমিকদের সরকার স্বীকৃত ৩৫০ টাকা দৈনিক মজুরি র পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছিল চা শ্রমিক দের মজুরি।এতে চা শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।আগে এই ন‍্যুনতম ন‍্যায‍্য মজুরি স্থির করা প্রয়োজন।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছে চা বাগানের শ্রমিক সংগঠন।জয়েন্ট ফোরামের আহ্বায়ক জিয়াউল আলম বলেছেন এতদিন চা শিল্পকে তিল তিল করে মারার যে প্রচেষ্টা চলছে ,এ তারই বহিঃপ্রকাশ। চা চাষের জমি প্রমোটারদের হাতে তুলে দেবার চক্রান্ত যা শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী। উত্তরবঙ্গের সাধারণ মানুষ ও এই সিদ্ধান্ত মানবেনা। এই সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গের জমি অধিগ্রহণ আইনের বিরোধী।

ঠিক একই ভাবে রাজ‍্যের বস্তিগুলোর দখল নিতে চলেছে সরকার ওরফে প্রোমোটাররা। প্রকৃতপক্ষে এমনভাবে আইন টি করা হয়েছে যাতে দীর্ঘদিন বসবাস করা বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করে জমির দখল নেবে প্রমোটার । তারা একটা ফ্ল্যাট হাতে পেলেও বাড়ির মালিকানা পাবেনা। এই আইনের সুফল পাবেন প্রোমোটাররা।যদিও ভাড়াটিয়াদের স্বার্থ সুরক্ষিত করার কথা আইনে বলা রয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তা থেকে যাবে কাগজে কলমে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।