কল্পনা গুপ্ত:চিন্তন নিউজ:২রা নভেম্বর:- এদেশের সবচেয়ে সস্তা প্রাণ হলো পরিযায়ী শ্রমিকদের। করোনা অতিমারিতে কারা চাপা পড়ে মরবে, কারা হাজার হাজার মাইল পায়ে হেঁটে ফিরতে গিয়ে ক্ষিদে, তৃষ্ণায় শিশু মহিলাসহ মরবে? তারা পরিযায়ী শ্রমিক। তারা ছাড়া শিল্পে উৎপাদন স্তব্ধ হয়ে যায়। এরা রুজি রোজগারের জন্য সপরিবারে ভিন্ন রাজ্যে বাসা বাধে। মোদি সরকারের তাৎক্ষণিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত একবারের জন্যেও ভাবেনি তাদের কথা।
নির্মমভাবে এরা নিজেদের বাসভূমিতে ফিরতে থাকে লকডাউনে কাজ হারিয়ে। সারা দেশজুড়ে যখন তাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে ঝড় ওঠে তখন এই রাজ্যের তৃণমূল সরকার নড়েচড়ে বসে একগুচ্ছ কর্মসংস্থানের ভাওতা স্বপ্ন দেখিয়ে উপচে পরা দরদে ফিরিয়ে আনার ছদ্ম ব্যবস্থা করে। কিন্তু এখনও প্রতিশ্রুতি পালনের কোন চিহ্ন পায়নি এই ফিরে আসা সব হারানো মানুষেরা। তাই আবার তারা পরিযায়ী হয়ে পড়তে বাধ্য হচ্ছে। এইরকমই বীরভূমের মুরারইয়ে ভাড়া করা বাস এসে দাঁড়াচ্ছে আর এই মানুষেরা যাচ্ছে কোথাও ক্ষেতের কাজে, কোথাও ইটভাটায়, নির্মান শ্রমিকের কাজে।
পরিযায়ী শ্রমিকরা জানান, প্রথমদিকে সরকারি আশ্বাস মিললেও পূজো চলে আসার পরেও কোথাও কাল মেলেনি, তাই তারা অন্যত্র যেতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকে বলেন, “প্রশাসন যদি আমাদের এলাকায় ছোট, মাঝারি শিল্প গড়ে তুলতো তাহলে আমাদের ভিন জেলা ও অন্য রাজ্যে কাজে যেতে হতো না।” কনকপুর গ্রামের জীবন মাল, সন্তোষ দাসেরা বলেন, দেনা করে পূজো কাটিয়েছি। ইটভাটায় কাজে যাচ্ছি। পাঁচমাস কাজ করে যে অর্থ উপার্জন করবো তাতে দেনা শোধ হবে, সংসারও চলবে।
মুরারইয়ের বিধায়ক আব্দুর রহমনের ‘ শিল্প গড়ে তোলা হবে’ বলে আশ্বাস বাক্যে কিন্তু এদের দিন চলছে না আর অন্ন সংস্থানও হচ্ছে না। তারা আশাহত হয়ে বাঁচার তাগিদে আজ আবার ঘরছাড়া, আবার তারা পরিযায়ী।