কৃষ্ণা সাবুই: চিন্তন নিউজ:৭ই জুলাই,২০২২– ভারতবর্ষকে পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্ত করার জন্য যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আন্দোলন হয়েছিল তা প্রায় সবার জানা। কত তাজা রক্তের বিনিময়ে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়েছে।
আজ ৭ই জুলাই দেশপ্রেমিক অসম সাহসী বিপ্লবী দীনেশ চন্দ্র গুপ্তের আত্মবলিদান দিবস।মানুষকে দীনেশ গুপ্ত সমন্ধে জানতে হবে।
বিপ্লবী জন্মেছিলেন ঢাকার মুন্সীগঞ্জে।বাবার নাম সতীশ চন্দ্র গুপ্ত, মা ছিলেন বিনোদিনী দেবী। দীনেশ ছিলেন তৃতীয় সন্তান।ডাকনাম ছিলো ‘নসু’।
প্রথম পড়াশোনা শুরু হয় গৌরীপুরের পাঠশালায়। ৯ বছর বয়সে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন।১৯২৬ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর ঢাকা কলেজে পড়াশোনা করেন।এই সময় ভারতের জাতিয় কংগ্রেসের আগে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বে গঠিত
‘বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স’ এ যোগ দেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে দলের নেতৃত্বে চলে আসেন।
এই সময় আই এস সি পরীক্ষা দেন কিন্তু পাশ করতে পারেন নি।
তিনি এবার মেদিনীপুর জেলার দায়িত্বে আসেন। অসাধারন বাগ্মী অসম সাহসী নেতা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতেন সদস্যদের প্রশিক্ষন দিয়ে লড়াই এর উপযুক্ত তৈরী করেছিলেন।
এবং সংগঠনের সদস্য বাড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন। মেদিনীপুর জেলায় অত্যাচারী পুলিশ অফিসার তিনজনকে বিপ্লবীরা গুলি করে শেষ করে দেয়। সারা দেশ জুড়ে ধরপাকড় ব্রিটিশ পুলিশদের কাজ হলো।
কোলকাতায় জেলের মধ্যে বন্দীদের অকথ্য নির্যাতন চলছে।জেলার ছিলেন সিম্পসন।
এই অত্যাচারী সিম্পসনকে হত্যার দায়িত্ব পড়লো__ বিনয় বসু,বাদল গুপ্ত এবং দীনেশ চন্দ্র গুপ্তের ওপর। বিপ্লবীরা একটা পরিকল্পনা করলেন রাইটার্স বিল্ডিংয়ে যেহেতু ব্রিটিশ সচিবালয় তাদের মধ্যেও ত্রাস জাগাতে হবে।
এলো সেইদিন,১৯৩০ সালের ৮ই ডিসেম্বর।
তিন বিপ্লবী ইউরোপিয়ান ছদ্মবেশে রাইটার্স বিল্ডিং এ ঢুকে সিম্পসনকে গুলি করে।
সঙ্গে সঙ্গে লাল বাজার থেকে প্রচুর সসস্ত্র পুলিশ আসে, শুরু হয় সেই অলিন্দ যুদ্ধ।হঠাৎ বাদল নিরস্ত্র হয়ে যান, সাথে সাথে পটাশিয়াম সায়নাইড খেয়ে মৃত্যু বরণ করেন। বিনয় বসু আর দীনেশ গুপ্ত নিজেদের মাথায় নিজেরা গুলি করেন। দু’জনকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যায়।১৯৩০ সালের ১৩ ই ডিসেম্বর বিনয় বসু মারা যায়।
দীনেশ সুস্থ হলে তাঁর নামে সরকার বিরোধী কাজ খুনের অভিযোগ আনা হয়।বিচারের নামে প্রহসন হোলো।এবং ফাঁসির আদেশ হলো। আজ ৭ই জুলাই ১৯৩১ সালে এই দিনে ফাঁসি হোলো বিল্পবী দীনেশ গুপ্তের। বাংলা মায়ের এই দামাল ছেলেকে চিন্তনের শ্রদ্ধা ।