চৈতালি নন্দী:চিন্তন নিউজ:২৪শে সেপ্টেম্বর:- ত্রিপুরায় গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ, আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপর নির্মম লাঠিচার্জের সাক্ষী থাকলো গোটা দেশ, যা ত্রিপুরার ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব ও নক্কারজনক ঘটনা। যদিও এরাজ্য বহুবার এই ঘটনার সাক্ষী। বিভিন্ন দাবীদাওয়া আদায়ের আন্দোলনে অত্যাচারির খর্গ নেমে আসে বার বার, এ ঘটনা এদেশে নতুন নয়।
১০৩২৩ জন শিক্ষককে ভোটের আগে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি সরকার। বামফ্রন্ট আমলে ১৩০০০ নতুন শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। যার মাপকাঠি ছিল আর্থিক ভাবে দূর্বল শ্রেনীদের জন্যে। পরে বিজেপির প্ররোচনায় এই নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়। আদালত দারিদ্র্যকে চাকরির মাপকাঠি হিসেবে মান্যতা না দেওয়ায় তা সুপ্রীম কোর্টে যায়। সেখানেও একই রায় বজায় থাকে। যদিও সুপ্রীম কোর্ট এই ১৩০০০ পদ সৃষ্টিকে বৈধতা দেয়। ইতিমধ্যেই অনিশ্চয়তা ও আর্থিক কারণে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৫০ জন শিক্ষক। কারণ তাদের চাকরির সময় সীমা ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত নির্দিষ্ট করা হয়েছিল।
এদিন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা ৩০০/৪০০ জনের দলে ভাগ হয়ে কোনো স্লোগান ছাড়াই এগোতে থাকে ত্রিপুরার সচিবালয়ের দিকে। এঁদের মনোভাব ছিল ‘লড়বো না হয় মরবো’ । এই সময় বারে বারে তাদের শাস্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা দেওয়া হতে থাকে। কোথাও কোথাও ধস্তাধস্তিও হয়। দিকে দিকে পুলিশের ব্যারিকেড টপকে শিক্ষকরা এগোতে থাকে। শেষপর্যন্ত তারা সচিবালয়ের গেটে পৌছতে সক্ষম হয়। এই সময় আন্দোলনরত শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ শুরু হয়, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও জলকামানে জেরবার করা হয় শিক্ষক দের। বহু শিক্ষক আহত ও রক্তাক্ত হন। মহিলা শিক্ষকরা লাঠির আঘাতে লুটিয়ে পড়েন মাটিতেই। নামানো হয় সিআরপিএফ। অবাধে চলে লাঠিচার্জ। বিজেপি সরকারের এই ফ্যাসিবাদী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ অত্যন্ত বিপজ্জনক।যা এখন প্রায় সর্বব্যাপী।
এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরার শিক্ষামন্ত্রী এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিতে বাধ্য হন। আপাতত ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তাদের চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, যা ত্রিপুরার নির্বাচনের বছর।
