স্বাতী শীল: চিন্তন নিউজ:১০ই এপ্রিল:-বুধবারই একটি অন্তর্বর্তী রায়ে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় যে,করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করতে হবে।এই বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি দুই সংস্থাই জনসাধারণের কাছ থেকে কোনো রকম অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে না।
নিঃসন্দেহে এটি একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ হলেও কার্যত সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে ল্যাবগুলির মধ্যে আর এই বিভ্রান্তির জেরে বেশকিছু ল্যাব এই মুহূর্তে করোনা সংক্রান্ত তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা স্থগিত রেখেছে।ডক্টর ডাঙ্গে,ডক্টর লাল প্যাথলজির মতো বড় সংস্থাগুলি শীর্ষ আদালতের রায়কে স্বীকৃতি দিয়েই সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু প্রশ্ন তুলে ধরেছেন ।
তারা বলেছেন তাঁরা শীর্ষ আদালতের রায়কে মেনে চলতে আগ্রহী কিন্তু করোনা টেস্টের ক্ষেত্রে ন্যূনতম কিছু খরচ প্রয়োজন। সেই খরচ কিভাবে বহন করা হবে ?আর কে বহন করবে? এক্ষেত্রে মুনাফার কথা যদি ছেড়ে দেওয়া হয় তা হ’লেও ভবিষ্যতে ল্যাব চালাতে সমস্যা হতে পারে এমন অবস্থা যদি তৈরি হয় তাকে তো মেনে নেওয়া যায় না ।
কেন্দ্র এর আগে বেসরকারি ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে ৪৫০০ টাকা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে সংক্রমণ বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশব্যাপী ব্যাপক হারে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র।সেইমতো রাজ্যগুলিতে নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে ন্যূনতম লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে। আইসিএমআর ১২টি রাজ্যে ৬৫ টি বেসরকারি ল্যাব কে করোনা পরীক্ষার ছাড়পত্র দিয়েছে, যার মধ্যে সর্বাধিক মহারাস্ট্র (১৪)।এরপর তেলেঙ্গানা(১০ )ও তামিলনাড়ু (৯)।
ডাঙ্গী ল্যাবের সিইও অর্জুনকে ডাঙ্গে বলেন করোনা পরীক্ষা একটি অতি স্পর্শকাতর বিষয়।যোগ্যতাসম্পন্ন চিকিৎসক, কর্মী, সংক্রমণ বিরোধী বিধিব্যবস্থা,বিশেষ ধরনের গাড়ি, বিশেষ প্রয়োজনীয় নানা যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়।এছাড়া কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও এখানে বিচার্য।তাই তাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পিপিই সরবরাহ করা নিঃসন্দেহে খরচসাপেক্ষ। কিন্তু কেন্দ্র যে মূল্য নির্ধারণ করেছে তা যথেষ্ট নয়। আর বিনামূল্যে পরীক্ষার ক্ষেত্রে অবশ্যই কেন্দ্র সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ।
থাইরোকেয়ার ল্যাবের তরফে সিইও ভেলুমনিও জানিয়েছেন বিনামূল্যে পরীক্ষার বিষয়টি সরকার নির্দিষ্ট করে দিক,কারণ এই মুহূর্তে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।তাই তারা আপাতত ল্যাবে করোনা পরীক্ষা বন্ধ রেখেছেন।
তবে কেন্দ্র এখনো পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। অন্যান্য দেশ কি করছে সেটাও এক্ষেত্রে বিচার্য। কোরিয়ায় যেমন বিদেশ ফেরত সকলের বিনামূল্যে পরীক্ষা করা হচ্ছে,তেমনি আবার আমেরিকার নীতি অন্য।এক্ষেত্রে সমস্তটাই এখন নির্ভর করছে কেন্দ্র কি প্রতিক্রিয়া দেয় তার উপর। বেসরকারি মুনাফার কাছে নতি স্বীকার না বেসরকারি সংস্থাগুলিকে চাপ দিয়ে বাধ্য করানো সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকরী করা, সেই দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। বেশ কিছু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কেন্দ্র সরকারের উচিত বেসরকারি ল্যাবের খরচে ভর্তুকি দেওয়া।