চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:১২ই সেপ্টেম্বর:–সিঙ্গুর থেকে নবান্ন, মুখ্যমন্ত্রীকে চার্জশিট দেওয়ার অভিযান।।
এই অভিযান বানচাল করতে ঐ একই দিনে মুখ্যমন্ত্রীর মিছিল এনআরসির বিরুদ্ধে।।
আজ থেকে প্রায় এক দশক আগে সিঙ্গুরের মাটিতেই রচিত হয়েছিল এরাজ্যের বেকার যুবকদের স্বপ্নের পরিসমাপ্তি।আজ সিঙ্গুর কাশফুলে ধূসর,এক জীবন্ত ধ্বংস স্তুপ।সেই মৃত্যু উপত্যকায় কাশফুল নয় ,উলুখাগড়া নয় কারখানা গড়ার লক্ষ্যে আগামীকাল থেকে বামপন্থী ছাত্রযুব দের সিঙ্গুর থেকে নবান্ন অভিযান।সিঙ্গুরের ঐ বন্ধ্যা কৃষি জমি তে আর কোনো দিনও ফলবে না কোনো ফসল।ঐ অকৃষিযোগ্য সিঙ্গুরের জমিতে কারখানা গড়ায় এখন ছাত্রযুব সহ আপামর মানুষের লক্ষ্য।জমিহারা,স্বপ্ন হারা,ক্ষতিপূরণ না পাওয়া কৃষক দেরও আজ লক্ষ্য সিঙ্গুরের কারখানা।
রাজ্যের ছাত্রযুবদের সঙ্গে দেখা না করার উদ্দেশ্যে ভয়ে পালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনই তিনি শুরু করছেন অসমের নাগরিক পঞ্জী নিয়ে তার পদযাত্রা, যা তার কর্মসূচি তে হঠাৎ যোগ হয়েছে।
আজ সিঙ্গুরের কৃষকদের ভেঙে পড়া কৃষক দের ঘরে না আছে অন্ন ,না আছে বৃষ্টির জল চুঁইয়ে পড়া আটকাতে কোনো ত্রিপল ,না আছে কোনো কর্মসংস্থানের স্বপ্ন।১০০দিনের জবকার্ড তৃনমূল নেতাদের পকেটে,সিঙ্গুরের ধ্বংস স্তুপের উপর তৈরী হচ্ছে তৃনমূলী নেতাদের কাটমানি টাকায় তৈরী প্রাসাদ।সিঙ্গুরের কৃষকরা যারা ছিল তৃনমূলের দাবার বোড়ে,তাদের প্রয়োজন হারিয়েছে চিরতরে।শুধু সিঙ্গুর নয় ,শেষ হয়ে গেছে শালবনী ,হলদিয়া সহ আরও অনেক কর্মসংস্থানের স্বপ্ন।সেই কারনেই আগামী দুদিন সেই কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে অভিযান সিঙ্গুর থেকে নবান্ন চলো।
তৃনমূলে র ঢাল হওয়া বিজেপি সরকার আজ দ্বিতীয় বার ক্ষমতায়।এই বিজেপির হাত ধরে শুরু হয়েছে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পগুলির মৃত্যুমিছিল।একের পর এক লাভজনক শিল্পগুলোকে বেসরকারী করনে বদ্ধপরিকর এই সরকার।এই তালিকায় রয়েছে বিএসএনএল ,প্রতিরক্ষা শিল্প সহ আরও অনেক শিল্প।বিজেপির কাছে শিল্পপতি হলো আম্বানি আদানীরা।তাদের জোরেই ভোটে জিতে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমেছে বিজেপি।শুরুতেই একটার পর একটা বাউন্সারের মতো ধেয়ে আসছে বিপুল অর্থনৈতিক মন্দা, বেকারত্বের হার ৯% এর উপর,গত ৪৫বছরে যা ছুঁয়েছে রেকর্ড মাত্রা।ডলারের তুলনায় প্রতিদিন পড়ছে টাকা, যা এখন নেমেছে বাঙলাদেশের থেকে ও নীচে।
বড় গাড়ি কারখানা গুলো বন্ধ রেখেছে উৎপাদন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে বহুগুণ।ভোগ্যপন্য বিক্রি তলানিতে, প্রতিদিন ছাঁটাই হয়ে কাজ হারাচ্ছেন বহু মানুষ।ক্ষুদ্র শিল্পের করুন দশা,কৃষকরা পাচ্ছে না ফসলের দাম,কৃষি বিমার টাকা,বাড়ছে আত্মহত্যা।
গত ২০০৮এর বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা আমরা দেখেছি আজকের অবস্থা আরও ভয়াবহ।সরকার ভেঙে নিচ্ছে রিসার্ভ ব্যাঙ্কের টাকা, যা আমার আপনার গচ্ছিত ধন, দেশের বিশেষ ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা না হলে যে টাকা য় হাত দেওয়া যায় না।ভারত কার্যত এখন’ রিপাবলিকান অব আন এমপ্লয়মেন্ট’।
এর উপর অবরুদ্ধ কাশ্মীর, সরকার আইন পরিবর্তন করে যে কোন বিরোধী স্বরকে দাবিয়ে রাখার ক্ষমতা অর্জন করেছে।
রাজ্যের তৃনমূলী সরকার সর্বক্ষেত্রে যে গভীর সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে ,তার ফল ভুগছে এরাজ্যের মানুষ।গত সাত আট বছরে বিপন্ন মানুষের জীবন জীবিকা।কর্মসংস্থানের আশা নেই, গনতন্ত্র বিপন্ন। তৃনমূলে র তৈরী সাম্প্রদায়িকতার উর্বর জমিতে ফসল ফলাচ্ছে বিজেপি।তৃনমূলের অভিশাপ থেকে আজ মুক্ত হতে মরীয়া বাঙলা।এসএসসি,পিএসসি ,টেট থেকে প্রতারিত ছাত্রযুবদের ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে প্রতিদিন।নার্স,প্যারাটিচার,এসএসকে,এমএকে তাদের হকের দাবীতে রাস্তায় নেমে পুলিশের নির্মম লাঠিচার্জ এর শিকার হচ্ছে।চাকরির জন্যে আজ আর মেধার দরকার পড়েনা ,চাই লক্ষ লক্ষ টাকা।ঘুষের কাছে মেধার প্রতিদিন ঘটছে পরাজয়।প্রতিদিন একটা র পর একটা কারখানা য় তালা,কলেজের সিট বিকোচ্ছে টাকার জোরে।শিল্পের কোনো আশা নেই।
যেই সিঙ্গুর থেকে ঘটেছিল পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বপ্নের পরিসমাপ্তি সেই সিঙ্গুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে শপথ নিয়ে শুরু হবে বামপন্থী ছাত্রযুব দের নতুন পথ চলা।নতুন কর্মমুখর বাঙলা গড়ার লক্ষ্যে প্রতিদিন রাস্তায় থাকবে এই যুবশক্তি।। আশা সবার ,সিঙ্গুরের ধ্বংস স্তুপ থেকে একদিন
ফিনিক্স পাখির মতো মাথা তুলে দাঁড়াবে এক সোনার বাঙলা।