দেশ

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে,বেসরকারিকরনের পথে সরকার।।


চৈতালী নন্দী:নিউজ ডেস্ক:২২শে নভেম্বর:–রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে,বেসরকারিকরনের পথে সরকার।।
একের এর পর এক জনবিরোধী ভ্রান্ত নীতি রূপায়নের পর ,ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি কে চাঙ্গা করার মরিয়া চেষ্টায় পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে সরকার।এই সপ্তাহে ই  অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছিলেন আগামী মার্চের মধ‍্যে বিক্রি করে দেওয়া হবে এয়ার ইন্ডিয়া, এবং ভারত পেট্রোলিয়াম সংস্থা দুটি।

এক ধাক্কায় মোট পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রির বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত নিলো কেন্দ্রীয় সরকার।শুধুমাত্র তাই নয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন এভাবেই সব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাই বেসরকারীকরনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।দ্বিতীয় ধাপে যে সব কোম্পানি গুলো বিক্রি হতে চলেছে সেগুলি হলো,কন্টেনার কর্পোরেশন(কনকর),শিপিং কর্পোরেশন, নিপকো ওটেহরি জলবিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম।
প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধাপে ধাপে শেয়ার বিক্রির মাধ‍্যমে কোম্পানি হস্তান্তর শুরু হবে।কেন্দ্রীয় সরকারের অংশীদারি প্রথম ধাপে ৫১% এর নীচে নামিয়ে আনা হবে যা পরে নামিয়ে আনা হবে ২৬% এ।সরকারের দাবী সরকারের সংখ‍্যাগরিষ্ঠ শেয়ার এমন ভাবে বিক্রি করা হবে যাতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকে।কিন্তু এর আগে এই শর্তে এয়ার ইন্ডিয়ার শেয়ার বিক্রি র ক্রেতা পাওয়া যায়নি।এছাড়া শেয়ার গুলো কিছু ক্ষেত্রে এমন সংস্থা কে বিক্রি করা হবে যা সরকারের পরিচালনাধীন।সেক্ষেত্রে কিছু কিছু কোম্পানির আইনের ধারাও সংশোধন করা হবে।ওএনজিসি র মতো লাভজনক সংস্থা যেমন দীর্ঘদিন ধরে বহু খরচ করে,পরিশ্রম করে তৈলক্ষেত্রগুলো অনুসন্ধান করে প্রযুক্তিগত বিশেষত্ব অর্জন করেছে, যেসব বেসরকারী কোম্পানি গুলো সেটা কিনবে তারা এর মূল‍্য দেবেনা।সেক্ষেত্রে হিসেবমতো সরকারি টাকারই অপচয় হবে।

যদিও অর্থনৈতিক মহলের বক্তব্য যে এই হস্তান্তর পদ্ধতি পুরোপুরি লোকদেখানো।একদিকে কর্পোরেট সংস্থা গুলো কে লক্ষকোটি টাকা ছাড় দিচ্ছে,অপরদিকে কোষাগার ভরাতে দেশীয় সম্পদ বিক্রি করছে।তাঁদের মতে, জীবনবীমার মতো বড় সংস্থাকে দিয়ে কিছু শেয়ার কেনানো যেতে পারে , কিন্তু কোম্পানির পুরো শেয়ার কেনানো অসম্ভব।এইভাবে বিপুলসংখ্যক সরকারি সংস্থা বিক্রি র সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন ঘটনা।প্রকৃতপক্ষে মৃতপ্রায় অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ই এর কারন।এর জন‍্যে কমানো হয়েছে কর্পোরেট কর,বেসরকারি লগ্নি না আসার কারনে সরকারী খরচ বাড়াতে হবে।এর জন‍্যে কোষাগারে টাকার যোগান দরকার।কিন্তু অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য এইভাবে লাভজনক কোম্পানি গুলো বিক্রি করে কোষাগার ভরে কি আদৌ অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন সম্ভব!এর আগে রিজার্ভ ব‍্যাঙ্কের তহবিল ভেঙে টাকা নিয়েছে কেন্দ্র, তারপর সোনা বিক্রি করেও মৃতপ্রায় অর্থনীতি কে সামাল দেওয়া যায়নি।শেয়ার বিক্রি করে এবার সরকারের লক্ষ‍্যমাত্রা ১.০৫ লক্ষ‍্য কোটি টাকা কোষাগারে জমা করা।এবার লাভজনক সংস্থা গুলি কে বিক্রি করে দেবার পর সরকার কিসে হাত দিতে চলেছে।দেশবাসী প্রমাদ গুনছেন;বিপথগামী সন্তানরা যেমন পূর্বপুরুষের সম্পদ বেচে খায়,এও কি তেমনই এক নিদর্শন!


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।