দেশ

রাজস্থানে কংগ্রেসের ঘর ভাঙতে ব্যর্থ বিজেপি নেতৃত্ব—-


কাকলি চ্যাটার্জী :-চিন্তন নিউজ:-১৪ই আগস্ট: রাজস্থানে কংগ্ৰেসের ঘর আপাতত ভাঙতে ব্যর্থ হল বিজেপি নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সঙ্গে জয়পুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে শচীন পাইলট সহ দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের সময় মতান্তর মিটে গিয়ে মৈত্রীর বন্ধন উজ্জ্বল হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে শুক্রবার থেকে বিধানসভা অধিবেশনে তাঁর সরকার আস্থাভোটের দাবী জানাবে। প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট ট্যুইটারে ঘোষণা করেন যে কংগ্রেস দল জনগণের স্বার্থে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। মুখ্যমন্ত্রী গেহলট, দলের সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল, ইনচার্জ অবিনাশ পান্ডে এবং রাজ্য সভাপতি গোবিন্দ সিং দোতসারা সহ অন্যান্য বিধায়কদের নিয়ে দলীয় বৈঠকে অংশ নেন। পাইলট হিন্দীতে ট্যুইট করেন, “আমরা রাজস্থানের মানুষের স্বার্থে এবং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।” পাইলট ও তাঁর অনুগামী ১৮ জনের কংগ্ৰেসে পুনরায় ফিরে আসা এক বিশেষ উদ্দীপনা সৃষ্টি করে রাজ্য রাজনীতিতে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দড়ি টানাটানি খেলা চলছিল। গেহলট ও পাইলট মুখোমুখি আলোচনায় অসন্তুষ্ট বিধায়কদের অভিযোগগুলির মান্যতা দেওয়া হবে এই বিষয়ে সকলে সহমত হন।

১৯ জন বিদ্রোহী বিধায়ককে সসম্মানে ফিরিয়ে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির অনাস্থা প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ঘোষণা করেন যে তাঁর সরকার বিধানসভায় আস্থাভোট চাইবে। অনেক লড়াই- আন্দোলন, আবেদন-নিবেদনের পর আগামীকাল শুরু হতে চলেছে বিধানসভা অধিবেশন‌।

গতকাল গেহলটের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দলের বৈঠকে তিনি বলেন যে তাঁর সরকার ১৯ জন বিদ্রোহী বিধায়কদের ছাড়া বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারতো কিন্তু তা মানুষকে খুশী করতে পারত না। মুখ্যমন্ত্রী সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে অনুরোধ জানান। গত একমাসের ঘটনা ভুলে গিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল বলেন যে কংগ্রেস এখন ঐক্যবদ্ধ,সব কিছু ঠিকঠাক চলছে। কংগ্রেস বিজেপির নোংরা রাজনীতির বিরুদ্ধে আগামীকাল বিধানসভায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করবে। মাত্র ৭২ জন বিধায়ক নিয়ে বিজেপি গেহলট সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মত অবস্থায় নেই।

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রবীণ নেতা বসুন্ধরা রাজে বলেছেন যে অশোক গেহলটের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার বেশী দিন স্থায়ী হবে না। বিরোধী দলনেতা গুলাবচাঁদ কাটারিয়া জানান যে বিজেপি অনাস্থা প্রস্তাব ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাজস্থান কংগ্রেসের অভিযোগ এই অতিমারি সময় অনেক চেষ্টাচরিত্র করে কংগ্রেসের বিদ্রোহী নেতাদের হরিয়ানার হোটেলে নজরবন্দি করে, কোটি কোটি টাকা সহ মন্ত্রীত্বের প্রলোভন দেখিয়ে আর একটা মধ্যপ্রদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব অগ্রসর হয়েছিল কিন্তু সব যে একই চালে বাজিমাত সম্ভব নয় সেটা দেখিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। শুধুমাত্র করোনাভাইরাস জনিত মহামারী রুখতে ব্যর্থতা নয় বিজেপির দেশবিরোধী, জনস্বার্থবিরোধী কর্পোরেট তোষণ মনোভাব সর্বত্র নিন্দিত সমালোচিত হচ্ছে। দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতিতে সোনা- রূপোর ইঁট দিয়ে রামমন্দির নির্মাণে ন্যক্কারজনক ভূমিকা, পি এম কেয়ার্স ফান্ডের কেলেঙ্কারি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও নিন্দার ঝড় তুলেছে। সেই দিন আর খুব দূরে নয় যেদিন জনতার রোষে টলে যাবে দিল্লির মসনদ। রাজস্থানের ঘটনা সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিমত।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।