চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:১৩ই ডিসেম্বর:–আলোয় ঝলমলে বিশ্ব বাঙলা বানিজ্য সন্মেলনের তলায় চাপা পড়ে গেল দীঘায় হকারদের বুক ফাটা কান্না। বানিজ্য সম্মেলনের নামে সরকারি খরচে প্রতিবছর চলছে বানিজ্য মেলা নামক সরকারি উৎসব।প্রতিবছরের মতো এবারেও এই উৎসব শুরু হয়েছে গতকাল থেকে।দীঘাতে অনুষ্ঠিত এই উৎসবে এবারও জাঁকজমকের কোনো অভাব ছিল না।ছিল গালভরা নানারকম প্রতিশ্রুতি ও বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ঘোষণা।
মুখে কোষাগারের দৈনতার কথা বললেও বিনিয়োগ আসুক বা না আসুক সরকারি খরচে এই মোচ্ছব চলছেই।
এই বানিজ্য সম্মেলনের নামে খরচ হচ্ছে কোটি কোটি সরকারি টাকা।সরকারি প্রচারের নামে প্রকৃতপক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর প্রচার চলছে।রাস্তার উপর দেওয়া হয়েছে পিচের প্রলেপ, রেলিং জুড়ে নীলসাদা রঙ এর বাহার।কোলাঘাট থেকে শুরু করে দীঘা পর্যন্ত হাজারে হাজারে ব্যানার।অন্যদিকে খুলে ফেলা হয়েছে রাস্তায় দুধারের যতো বিরোধী দলের ঝান্ডা আর ব্যানার।সিপিআইএম পূর্ব মেদিনীপুরের জলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন ,কোন আইনে কোন রাজনৈতিক দলের ফেস্টুন আগামী নোটিশ ছাড়া খুলে ফেলা সম্ভব?
এই বানিজ্য সম্মেলনে র কারনে দীঘার ৩ কিমি এলাকা জুড়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে হকার দোকান।ভাঙা হয়েছে কয়েকশো ছোট দোকানও।দেশে রাজ্যে যেখানে চাকরী র আকাল ,সেখানে কয়েক হাজার মানুষের রুজিরুটির উপর অমানবিক আঘাত হানা হয়েছে।এই হকারদের অনেক কষ্টে জমানো পুঁজিতে সাজানো দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়েছেন এই নক্কারজনক ঘটনার।যদিও প্রশাসনের তরফে বলা হচ্ছে নোটিশ দেওয়া সত্বেও হকাররা সরেনি।তাই তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।কিন্তু তাই যদি হয়,পুনর্বাসনের কি হবে?এর কোনো উত্তর সরকারের কোনো আমলা দিতে পারেনি।
একদিকে আলোর মালায় সাজানো মঞ্চ অন্যদিকে সহায় সম্বল হারানো একদল নিঃস্ব মানুষ ও তাদের নিরন্ন পরিবার।হলদিয়া শিল্পাঞ্চল মরুভূমি, ধুঁকছে তাজপুর, শঙ্করপুর মৎস বন্দর,কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ হলদিয়া বন্দর।সেখানে এই বিপুল সরকারি খরচ কতোটা যুক্তিসঙ্গত!প্রকৃতপক্ষে সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার উপর কুঠারাঘাত করে কোনো শিল্প সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখা যায় না।