শ্বাতী শীল:চিন্তন নিউজ:২০শে অক্টোবর:–বিজেপি সরকারের আমলে বাঙালি , বাঙালি সংস্কৃতি বার বার আক্রান্ত
বাঙালির সংস্কৃতি, পোষাক, ভাষা,স্বভাব প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়,বহুবার বহুভাবে আক্রান্ত হয়েছে বিজেপি সংঘ পরিবারের হাতে। হালে , অসমে প্রকাশিত জাতীয় নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত তালিকাতেও কৌশল করে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে বহু বাঙালির।
লোকসভা ভোটের পর থেকেই যেন বিশেষভাবে বাংলা ও বাঙালিকে নিশানা করেছে বিজেপি।বাঙালি বিরোধী বিরূপ মন্তব্য ও মনোভাবের জন্য বারে বারে শিরোনামে এসেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু সেই সব অভিযোগকে পিছনে ফেলে দিয়েছে মঙ্গলবার দিল্লিতে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা যা আপামর বাঙালিকে ভাবতে বাধ্য করেছে,এবার কি তবে বিজেপির নিশানায় বাঙালির প্রিয় খাদ্য মাছ? দিল্লির মাছপ্রিয় বাঙালির কাছে অতি পরিচিত নাম কালকাজির মাছবাজার বা মাচ্ছি মার্কেট , যেখানে ক্রেতা ও বিক্রেতা সকলেই বাঙালি হওয়ায় বিশেষত সন্ধ্যাবেলা সেই স্থান সরগরম থাকে বাংলাভাষায়। একদিকে মাছের বাজার, অন্যদিকে সারি দিয়ে সবজির দোকান, যেন সুদূর রাজধানীতে একটুকরো কোলকাতার ছোঁয়া।
অভিযোগ, গত মঙ্গলবার, এই মাচ্ছি বাজার আক্রান্ত হয়,ভাঙচুর চালানো হয় দোকানগুলিতে, এমনকি পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হয় অস্থায়ী দোকানগুলিকে।আলো না থাকায় ব্যাবসা চালাতে অসুবিধা হচ্ছে দোকানিদের। স্বভাবতই বাজার করতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে রাজধানীর মাছপ্রিয় বাঙালিদের। পুরো ঘটনাটি নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন দোকানিরা।দোকান ভাঙার কারণ কি?,,এই বিষয়ে সরকারি তরফে কোন সদুত্তর না মিললেও দোকানিদের একাংশের দাবি,যে ভাঙার সময় পুরবোর্ডের কর্মীদের বলতে শোনা গেছে, এখানে ভিড় হয় প্রবল। আবার , কেউ কেউ বলেছেন,মাছের গন্ধ না কি না-পসন্দ বিজেপির পুরবোর্ডের কর্তাদের। যদিও সরকারি ভাবে এই বিষয়ে পুরবোর্ডের তরফে কোন বিবৃতি দেওয়া হয় নি। তবে অনেকেরই মতে,দিওয়ালির আগে পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা নেই। যদিও দিওয়ালি পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির ঠিক কতটা ইতিবাচক পরিবর্তন হবে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থেকেই যায়।
দিল্লির মাচ্ছি বাজার অঞ্চলেই এক বাঙালি বাসিন্দা অভিরূপ চক্রবর্তী জানান, প্রায় পনেরো বছর ধরে উনি এই এলাকায় দোকান চালান, কিন্তু প্রতিবারই ঠিক দেওয়ালির আগে কোন অলিখিত কারণে এইভাবে দোকানগুলিকে ভেঙে দিয়ে উৎসবের মরশুমে মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা হয় বাঙালি রসনাকে। ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এই প্রবাদকে মুছে দিতে বাঙালির খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করে অনৈতিক ভাবে দোকানগুলিকে ভাঙা ঠিক কতটা ন্যায়সঙ্গত,সেই নিয়ে বারে বারে প্রশ্ন উঠে এলেও উত্তর আজও অধরা।।