চিন্তন নিউজ, ২৪ নভেম্বর: তুমি পুঁজি বিনিয়োগ করো। সেটা চোখে দেখা যায়। তাই তার মূল্য আছে। তুমি কাঁচামাল দাও। সেটা চোখে দেখা যায়। তাই তার মূল্য আছে। তুমি পরিকাঠামো তৈরী করো। সেটা চোখে দেখা যায়। তাই তার মূল্য আছে। আমি আমার শ্রম দেই। সেই শ্রম চোখে দেখা যায় না। তাই শ্রম তোমার কাছে মূল্যহীন। আমার শ্রম না থাকলে তোমার পুঁজি, তোমার কাঁচামাল, তোমার পরিকাঠামো, এই সব কিছুই মূল্যহীন হয়ে পড়ে থাকতো।
তুমি সওদাগর। তোমার সওদা তুমি কড়ায়গণ্ডায় বুঝে নাও। আমি শ্রমিক। আমিও আমার শ্রমের সওদাগর। আমারও আমার সওদা বুঝে নেওয়ার অধিকার আছে। তুমি যদি জোরজবরদস্তি বারো ঘন্টা কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করার ক্ষমতা দেখাতে চাও, তাহলে আমিও সেই ক্ষমতা ভেঙে চুরমার করে দেওয়ার হিম্মত রাখি। তুমি যদি লেঅফ, লকআউট করার ক্ষমতা রাখতে চাও, তাহলে আমিও ধর্মঘট করার অধিকার রাখি।
সারা দেশ জুড়ে করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে পনেরো কোটি মানুষ যখন বেকারত্বের জ্বালায় জ্বলছে তখন আমার দেশের এক কর্পোরেট পুঁজির মালিক পৃথিবীর চতুর্থ ধনী ব্যক্তির তালিকায় নিজের নাম তুলছেন। কারণ তিনি চৌকিদার পোষেন। সেই চৌকিদার, যিনি সংকট কালে একশো চল্লিশ হাজার কোটি টাকা কর্পোরেট পুঁজিকে ডাইরেক্ট কর ছাড় দেন, অথচ আয়করের আওতার বাইরে থাকা মানুষগুলোকে পরিবার পিছু ৭৫০০টাকা দেওয়ার কথা ভাবেন না। তোমরা যদি চৌকিদার পোষার ক্ষমতা রাখো, তাহলে আমরাও সেই চৌকিদারকে টেনে নামানোর ক্ষমতা রাখি। তোমরা যদি ভেবে থাকো, তোমাদের পোষা চৌকিদারকে দিয়ে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প গুলোকে কব্জা করবে, তাহলে আগামী ২৬শে নভেম্বর রাস্তায় দেখা হবে।
অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্যে সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু না করে, ফোরেদের স্বার্থে কৃষি আইন পাস করানোর হিসেবটা রাস্তাতেই বুঝে নেওয়া হবে। তোমাদের চৌকিদারের পূর্বসূরী, যিনি এক সময়ে তোমাদের “ফিল গুড” হাওয়ায় মাতিয়ে ছিলেন তার পরিনতি হয়েছিল ইতিহাসের আস্তাকুঁড়েতে। তোমাদের পোষা চৌকিদারকেও ইতিহাসের আস্তাকুঁড়েতেই নিক্ষেপ করবে লাল ঝান্ডার দল। আগামী ২৬শে নভেম্বর দেশের সব রাস্তার দখল নেবে লাল ঝান্ডা। সারা দেশকে স্তব্ধ করে হুঁশিয়ারি ঘোষণা করবে। এই হুঁশিয়ারি লাল ঝান্ডার লড়াইয়ে সূচনা মাত্র।