দেশ

এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টে প্রকাশ- দিল্লির পুলিশ দাঙ্গায় জড়িত ছিলো।


কল্পনা গুপ্ত:- চিন্তন নিউজ:-৩০শে আগস্ট,২০২০:- গত ফেব্রুয়ারি মাসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে দিল্লিতে যে হিংসার তান্ডব চলেছিল তাতে দিল্লি পুলিশ জড়িত ছিল বলে এক রিপোর্টে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল প্রকাশ করে।

উত্তর পূর্ব দিল্লিতে সংঘর্ষ ঘটেছিল সিএএ সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে যাতে নিহত হয়েছিলো কমপক্ষে৫০ জন আর আহত হয়েছিল কয়েকশো মানুষ। পুলিশের ভূমিকায় নিরপেক্ষতার পরিবর্তে দাঙ্গা সহায়কের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও তা নিয়ে গত ছয় মাসে কোন তদন্ত হয় নি। এই বিষয়ে সি পি আই এমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ফেসবুকে জানান, ” দিল্লির পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণে। মন্ত্রী এবিষয়ে অনেক আগেই এতখানি হাত পাকিয়েছেন যে আদালতের নির্দেশে নিজের রাজ্যে ঢুকতে পারছিলেন না।”

দাঙ্গা নিয়ে ঐ রিপোর্টে যে বিষয়গুলি উল্লেখ আছে সেগুলি হল:-
১. এই দাঙ্গায় পুলিশ সক্রিয় অংশগ্রহণ করা সত্ত্বেও কোন তদন্ত হয়নি।

২. ঘটনার সময়ে হিংসা না থামিয়ে বরং সি এ এ বিরোধীদেরই শুধু গ্রেফতার করা হয়েছে।

৩. হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার অভাব রয়েছে।

দাঙ্গার সময়ে সোস্যাল মিডিয়ার একাধিক ভাইরাল হওয়া ভিডিও যাচাই করে এবং প্রায় ৫০ জন দাঙ্গাপীড়িতের সাক্ষাৎকার নিয়ে এই রিপোর্ট প্রস্তুত করে এই সংগঠন।

রিপোর্টে বাবু খান নামে এক ব্যক্তি জানান, অজিত দোভাল চলে যাবার পরের দিনই একদল উত্তেজিত জনতা তাঁর বাড়িতে আক্রমণ চালায়, তাঁর দুই ছেলে মারা যায়। হিংসা বাড়ার সাথে সাথেই বেসরকারি চিকিৎসা ক্লিনিক বন্ধ করে দিতে বাধ্য করে। অবস্থা চরমে উঠলে অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। এই সময়ে পুলিশ নিষ্ক্রিয় দর্শকের ভূমিকা পালন করে।

আথার নামে এক ব্যক্তির সাক্ষাৎকারে এই সংগঠন জানতে পারে, বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ আথারকে আটকায় এবং সে মুসলিম বলে জানতে পারার পর পুলিশ তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে আরো ২৫ জনের সাথে ৪ দিন আটকে রেখে তাঁর উপর অকথ্য অত্যাচার চালায়। তখন পুলিশ বার বার বলতে থাকে,” আজাদি চাই? এই নে আজাদি।” এই সব সম্পূর্ণ নিরপরাধীদের আদালতে তোলা হয় বিচারের জন্য কিন্তু দাঙ্গা সাহায্যকারী পুলিশের জন্য কোন তদন্ত তো হলোই না বরঞ্চ ১১ ই মার্চ লোকসভায় কেন্দ্রীয় সরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, দিল্লি দাঙ্গায় পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

ভারতে এমিনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আইনি ও নীতিগত বিষয়ের প্রধান মি. শর্মা জানান, ” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে দাবি করেছেন, তদন্তে তার সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র ধরা পড়েছে। পুলিশ ব্যাপকহারে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।”


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।