বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রাজ্য

আমফানের উৎস, নামকরণ ও পরবর্তী ঝড়সমূহ


কল্পনা গুপ্ত: চিন্তন নিউজ:২৩শে মে:- ঘূর্ণিঝড়ের বেশিরভাগেরই উৎস স্থল হলো ভারত মহাসাগর বা বঙ্গোপসাগরের উপর। এই সাগর সংলগ্ন এলাকায় ঘিরে রয়েছে ঘন জনবসতি পূর্ণ দেশগুলি। এই দেশগুলি থেকে বিভিন্ন সময়ে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড়গুলির নামকরণ করা হয়েছে। ২০০০সালে নামকরণের নিয়মটি তৈরি করা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা দেশগুলির মধ্যে ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান,পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এর সাথে ২০১৮সালে যুক্ত হয়েছে আরো ৭টা দেশ ১৬বছর আগে ২০০৪ সালে আমফানের নামকরণ করেছিলো থাইল্যান্ড। যে মহাসাগর বা সাগর ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, তার আশপাশের দেশগুলিই নামকরণ করে ঝড়ের।

আমফান তছনছ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গকে।তিনদিন অতিক্রান্ত, এখনও রাজ্যের বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন,জল নেই, অন্তর্জাল পরিষেবা বিচ্ছিন্ন। বহু মানুষ ঘরছাড়া, বিশেষত চব্বিশ পরগণা, মেদিনীপুরের উপকূল সংলগ্ন এলাকার। চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লবণাক্ত জল ঢুকে গিয়ে। মাঠের ধান গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে। বহু জায়গায় পুরানো গাছ, দামী গাছ পড়ে গিয়ে পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে। কঠিন সংগ্রামে সমস্ত ক্ষতিপূরণের কাজে মানুষ যুক্ত হয়েছে।

কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্যি যে বেশ কয়েকটি বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় অপেক্ষা করছে বঙ্গোপসাগরে। এই ট্রপিক্যাল অঞ্চলের অধিবাসী বলেই বোধহয় সবার একটু জেনে নেওয়া প্রয়োজন ঘূর্ণিঝড়ের জীবনশৈলী সম্বন্ধে। গড়ে ৯ থেকে ১০দিন একটি সাইক্লোন সক্রিয় থাকে। ট্রপিকাল সাইক্লোন ৩টি পর্যায়ে শেষ হয়- ইম্যাচিওর, ম্যাচিওর, ডিকে।
ট্রপোস্ফেয়ারের একেবারে নিম্নস্তরের উষ্ণতা বাড়লে এবং সেই তাপ সমুদ্র স্তরের একটা বড় অংশে সঞ্চারিত হয়ে উত্তপ্ত হলে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ ঘূর্নিঝড়ের সবচেয়ে বড়ো উপাদান হলো তাপ।
দ্বিতীয় পর্যায়ে শক্তিশালী হাওয়া উত্তপ্ত ও কম ঘনত্বযুক্ত বায়ু অঞ্চলের দিকে ছোটে। এই অংশটি হল সাইক্লোনের চোখ।
তৃতীয় পর্যায়টি হলো ম্যাচিওর স্টেজ। এই পর্যায়ে ঝড় সমুদ্রের মধ্যেই ঘুরতে থাকে। এরপরের স্টেজে সাইক্লোনটি স্থলভাগের দিকে ছুটে আসে অথবা জলভাগেই অপেক্ষাকৃত শীতল অংশের দিকে ছুটে যায়। যদি আমফানের মত স্থলভাগের দিকে ছুটে আসে তাহলে ধ্বংসলীলা তীব্র হবে এবং ২৪ ঘন্টার বেশি সময় ধরে বৃষ্টি চলবে। পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘নিস্বর্গ’। নামটি বাংলাদেশের দেওয়া। তারপরে আসবে গতি- নামকরণে ভারত। তারপরবর্তীতে আসবে ‘নিভার’ যার নাম দিয়েছে ইরান।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।