লাল্টু ঘোষ:চিন্তন নিউজ:২৪শে মে:–নিখোঁজ প্রশাসন, কোয়ারেন্টাইনে তৃণমূল নেতা এবং তার স্যাঙাৎবাহিনী। মন্ত্রীরা নেমে পড়েছে ঠিকাদারদের সঙ্গে দরাদরিতে। বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা অপেক্ষা করছেন নবান্নদেবীর নির্দেশের, তিনি মহাব্যস্ত আগামী ভোটের অঙ্ক কষাকষিতে।
আমফান চলে যাওয়ার পর প্রায় চারদিন অতিক্রান্ত, হাওড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে দেখা নেই বিদ্যুতের, পানীয় জলের তীব্র অভাব। স্নানের জল তো দূরের কথা, খাওয়ার জলও অমিল। হাতে গোনা কয়েকটি টিউবওয়েলের সিংহভাগ খারাপ। নেই বিদ্যুৎ, নেই নেটওয়ার্ক। প্রয়োজনের মোমবাতিও মিলছে না দোকানে দীর্ঘদিন লকডাউনের কারণে। বয়স্ক, অসুস্থ মানুষের অবস্থা আরও সঙ্গীন।
করোনার বিধিনিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আজ হাওড়ার বেলেপোল, গড়ফা, মৌখালি সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা পথে নেমে আসেন, রাস্তা অবরোধ করেন দফায় দফায়, বিক্ষোভ দেখান। প্রশাসনের বিরুদ্ধে উগরে দেন জমানো ক্ষোভ। এর মধ্যে খবর আসে মাননীয়া আসবেন পরিদর্শনে। তাঁর আসার জন্য তৎপরতার সঙ্গে রাস্তায় পড়ে থাকা গাছপালা সরিয়ে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। কিন্তু এলাকায় বিক্ষোভের খবর পেয়ে তিনি আর ওমুখো হ’তে সাহস পান নি।
লকডাউন হোক, আমফানই হোক ভরসা সেই এলাকার বামপন্থী ছাত্র যুব কমরেডরা। প্রয়োজন মত জল, ওষুধ, খাবারদাবার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া থেকে পরিযায়ীদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা সবটুকুই করে চলেছে নীরবে, কোনো প্রচারের তোয়াক্কা না করেই। কাল ডোমজুড় থেকে হেঁটে জগাছা পৌঁছে যান একদল পরিযায়ী শ্রমিক যাদের মধ্যে ছিলেন মহিলা এবং শিশু। তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি বাড়ি ফেরার জন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন এই কমরেডরা। মুখ্যমন্ত্রী যাই বলুন না কেন মানুষের পাশে, মানুষের সাহায্যে আগামী দিনেও একইভাবে পাশে থাকবেন অকুতোভয় বামপন্থীরা-–- নিজেদের বিকিয়ে দিয়ে নয়, মাথা উঁচু করে।