পাপিয়া দাস মজুমদার:-চিন্তন নিউজ:- ৩০শে আগস্ট, ২০২০:- হিন্দুত্ব বাদী সংগঠনের ক্ষোভের মুখে পড়ে জনপ্রিয় দূরদর্শন ধারাবাহিক ‘বেগম জান ‘ দু – মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হলো আসামে। ঐ সংগঠনের অভিযোগ, হিন্দু ও আসাম সংস্কৃতিকে কলুষিত করে “লাভ জিহাদের ” প্রচার করা হচ্ছে। এই রকম ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে ক্ষোভ প্রদর্শনের ফলে স্থানীয় প্রশাসন এই ধারাবাহিকটিকে গত ২৪শে আগস্ট দু’ – মাসের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ।
আসামের স্থানীয় বিনোদন চ্যানেল ‘রেঙ্গনি’তে ‘বেগম জান’ ধারাবাহিকটি সম্প্রচার করা হতো। চলতি বছরের জুলাই মাসে এই ধারাবাহিকটি সম্প্রচার হবার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। এই ধারাবাহিকে এক মুসলিম ব্যাক্তির সহায়তায় এক হিন্দু মেয়ের সমাজের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। এতে হিন্দু জাগরণ মঞ্চ সহ একাধিক সংগঠন রাস্থায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । হিন্দু জন জাগ্রুতি সমিতি অনলাইনে স্বাক্ষর অভিযানও শুরু করে। বিপরীতে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বলছে এই কাহিনীতে ধর্মের উর্ধ্বে ওঠে মানবতার কথাই বলা হয়েছে। ধারাবাহিকটিতে হিন্দু মেয়ের চরিত্রের অভিনেত্রী প্রীতি কঙ্গণাও একই কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন গল্পটি সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের, যেখানে মানবতার প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বেশী। এখানে লাভ জেহাদের সাথে কোনও সম্পর্কই নেই।
প্রীতি কঙ্গণাকে এই ধারাবাহিকে অভিনয় করার জন্য ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং তাঁর পরিবারকেও হেনস্থা করা হয়েছে। গুয়াহাটি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এই অভিনেত্রী।
অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ” আইন ও প্রশাসনের উপর সম্পূর্ণ আস্থাশীল, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শিল্পীদের গালিগালাজ এবং ট্রোল করা আজকাল ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে , যা অত্যন্ত দুঃখজনক। “
পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা নিয়ে গুয়াহাটি পুলিশ আধিকারিক এম পি গুপ্তা জানিয়েছেন যে শিল্পীর অভিযোগ পাওয়ার পর দিসপুর পুলিশ স্টেশনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। এই ধারাবাহিকটি নিষিদ্ধ হবার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন যে জেলা পর্যায়ের মনিটরিং কমিটির ১০(দশ) সদস্যের সমন্বয়ে আলোচনা হবার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে এলাকার শান্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবার সম্ভাবনা ছিল। এছাড়া সমাজের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার মতো অভিযোগ ছিল এই ধারাবাহিক এর বিরুদ্ধে ।